১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হাসপাতাল চত্বরে ধূমপানের হার ৮৮ শতাংশ

-

পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ৫৭% পাবলিক প্লেসে এবং ৪৪% পাবলিক পরিবহনে ধূমপান করতে দেখা গেছে। বিভাগীয় শহরগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অবস্থা সংক্রান্ত গবেষণায় দেখা যায়, ৪২% পাবলিক প্লেসে এবং ৩৭% পাবলিক পরিবহনে ধূমপানমুক্ত সাইন পাওয়া গেছে। হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শতভাগ ধূমপানমুক্ত থাকার কথা থাকলেও ৮৮% হাসপাতাল এবং ৫৮% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতর ধূমপান করতে দেখা গেছে। ১০০% লঞ্চ-ফেরিতে ধূমপান করতে দেখা গেছে। পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান শুধু ধূমপায়ীকেই নয়, আশেপাশের সবাইকে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি করছে। সম্প্রতি টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) কর্তৃক ৮টি বিভাগীয় শহরে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অবস্থা শীর্ষক একটি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় এমন ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ডেভেলপমেন্ট অ্যাকটিভিটিস অব সোসাইটি (ডাস) ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সম্মিলিত উদ্যোগে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে ‘পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অবস্থা শীর্ষক গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের উপদেষ্টা মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের পরামর্শক হোসেন আলী খোন্দকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ট্যুরিস্ট পুলিশ ঢাকা রিজিওনের পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হক পিপিএম, বিআইডব্লিউটিসির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) জেসমিন আরা বেগম, বিআরটিসির ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: সরকার ফারহানা কবীর, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের মো: মামুনুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস-বাংলাদেশের পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন প্রমুখ।
গবেষণার জরিপ থেকে জানা যায় দু’টি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি সবচেয়ে বেশি আইনভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহসহ মোট ৮টি বিভাগীয় শহরের বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮৮% বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘনের চিত্র পাওয়া গেছে। ১৭% পাবলিক প্লেসে অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দ্বারা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে আইনের প্রয়োগ বাড়াতে হবে, টাস্কফোর্সগুলোকে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে দেশের তামাক ব্যবহারের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। দেশকে তামাকমুক্ত করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের কোনো বিকল্প নেই। সভাপতির বক্তব্যে মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালে ধূমপানের চিত্র অত্যন্ত হতাশাজনক। সুতরাং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ২টি সিগারেট কোম্পানি প্রতিনিয়ত আইনলঙ্ঘনসহ জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিতে হস্তক্ষেপ করে চলেছে।


আরো সংবাদ



premium cement