৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কেরানীগঞ্জে মোটরসাইকেল বাহিনীর হামলায় জীবন নিয়ে শঙ্কিত একাধিক পরিবার

-

কেরানীগঞ্জে মোটরসাইকেল বাহিনীর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে একাধিক পরিবার। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় পৃথক পৃথক মামলা ও জিডি করা হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো মামলা কেন করা হয়েছে তার জন্য খেসারত দিতে হচ্ছে বাদিদের। এই বাহিনীর ভয়ে জীবন শঙ্কিত হয়ে পড়েছে ওই সব পরিবারের সদস্যদের। তবে পুলিশ বলছে আসামিদের দু-একজনকে গ্রেফতার করা হলেও তারা জামিনে আছে। পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় এই চক্রের অনুমতি ছাড়া এই এলাকায় কেউ নিজেদের জমিতেও স্থাপনা নির্মাণ করতে পারেন না। ‘অনুমতি’ কিংবা ‘বোঝাপড়া’ ছাড়া কেউ এলাকায় কোনো প্রকল্প বা স্থাপনা করতে গেলে চক্রের নেপথ্যের ব্যক্তিদের হুকুমে ১০ মিনিটের মধ্যেই জড়ো হয়ে যান ‘মোটরসাইকেল বাহিনী’। শুরু করেন মারধর, ভাঙচুর ও উচ্ছেদ। সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় এই ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়েছে খুব কম ক্ষেত্রেই।
সম্প্রতি কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এরকমই একটি মামলা করেন ‘কাঁঠালতলীর গ্রিন সিটি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, গত ৩ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে হাবিবুর রহমান হাবিবের নেতৃত্বে কিছু লোক একটি মাইক্রোবাস ও ২০-২২টি মোটরসাইকেল নিয়ে তার অফিস নির্মাণের কাজে বাধা দেয়। তারা লাঠিসোঁটা, রড, রামদা ও চাপাতি নিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। যাওয়ার সময় অফিসের স্টাফ কাইয়ুম ও নাছিরসহ নির্মাণ শ্রমিকদের অফিস থেকে বের করে দেয়।
দেলোয়ার বলেন, এই ঘটনায় একটি মামলা করা হলে অভিযুক্তরা তার বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবাকে হুমকি দিয়ে বলে ‘তোর ছেলেকে যেখানে পাবো, সেখানে গুলি করে মারবো’। এই কথা শুনে দেলোয়ারের বৃদ্ধ বাবা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অসুস্থ বাবারও খোঁজ নিতে পারছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু দেলোয়ার নন, এই বাহিনীর বিরুদ্ধে আরো একাধিক ব্যক্তি থানায় মামলা ও জিডি করেছেন। কিন্তু এই বাহিনীর শেল্টারদাতা একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের কিছুই করা যাচ্ছে না। পুলিশ দু-একজনকে গ্রেফতার করলেও ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের জামিনে ছাড়িয়ে আনেন। মুক্তি পাওয়ার পর তারা বাদির বিরুদ্ধে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেনের মামলার আইও কেরানীগঞ্জ থানার এসআই রেজাউল নয়া দিগন্তকে বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে তারা জামিনে বেরিয়ে এসেছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। ওসি স্যারের অনুমতি ছাড়া বিস্তারিত তথ্য দেয়া যাবে না।


আরো সংবাদ



premium cement