৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ৩১৭৩ জনের যোগদানে বাধা নেই

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
-


বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন ক্যাটাগরির ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক)’ পদে নিয়োগ চূড়ান্তের পর যোগদানের জন্য জারি করা প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এর ফলে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ৩১৭৩ জন তাদের নিজ নিজ পদে যোগদানে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। সাথে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: মাকসুদ উল্লাহ।
এ দিকে আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশে হতাশা ব্যক্ত করেছেন রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, দুঃখজনক হলো যার সার্টিফিকেটই বাতিল তার এখন নিয়োগ হচ্ছে। আবেদ আলী তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে বলেছেন কার কার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তাদের নাম পর্যন্ত এসেছে নিয়োগের ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, এখন মহামান্য আদালতের নির্দেশনা শিরোধার্য। তবে একজন নাগরিক হিসেবে হতাশা ব্যক্ত করছি।
আদেশে আপিল বিভাগ ছয় সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে রুল নিষ্পত্তি করতে বলেছেন। আর তিন সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়া শওকত আকবরসহ ১৮ জনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ২৭ জানুয়ারি বিচারপতি মো: আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এরপর সরকারপক্ষ আপিল বিভাগে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে।

২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর এ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। পরে ২০২২ সালের ১৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত। তবে এ নিয়োগ পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস’ হয়েছে দাবি করে গত বছর কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
‘ফাঁস প্রশ্নের টাকায় নিজ পকেটের উত্তর মেলান আবেদ আলী, প্রশ্ন ফাঁস চক্রের ১১৫ অ্যাকাউন্টে ১২৫ কোটি টাকা লেনদেন’ শীর্ষক একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাকাউন্টটিতে সবচেয়ে বেশি টাকা জমা হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। ওই বছরের ১৮ মার্চ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ইনস্ট্রাক্টর ও জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার পরদিন ১৯ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৫ দিনে অ্যাকাউন্টটিতে জমা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এরপর ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ যথাক্রমে ২০ লাখ, ১৭ লাখ ও ১৯ লাখ করে চেকের মাধ্যমে মোট ৫৬ লাখ টাকা তুলে নেয়া হয়।
এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মনোনীতদেরকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে ১০ম গ্রেডে নিয়োগে সাময়িকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে।
এরপর ২৩ জানুয়ারি তিন হাজার ১৭৩ জনকে যোগদানের জন্য পৃথক প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়।
রিটকারীদের আইনজীবীর দাবি, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর একই রকমভাবে রেলওয়ের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে সেটা করা হয়নি। এ ছাড়া সিআইডিতে অভিযোগ এখনো তদন্তাধীন।

 


আরো সংবাদ



premium cement