৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`
বাসচাপায় কিশোর নিহত

রামপুরায় বাস আটকে সড়ক অবরোধ

মৌচাকে বাসে যৌন হয়রানির ঘটনায় অবরোধ
-

রাজধানী রামপুরায় বাসচাপায় সাজিদ হোসেন (১৬) নিহতের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবি ও ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষতিপূরণের দাবিতে ‘রমজান পরিবহনের’ বাস আটকে সড়ক অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। একই সাথে গত মঙ্গলবার মৌচাকের আনসার ক্যাম্পের সামনে লাব্বাইক পরিবহনে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গতকাল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীর সহপাঠী ও অন্য শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে পৃথক এলাকায় এই বিক্ষোভ হয়।
গতকাল বেলা ১টার দিকে বাসচাপায় কিশোর নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা রামপুরা বাজার এলকায় সড়ক অবরোধ করেন। এতে বাড্ডা-রামপুরা-মালিবাগ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় তীব্র যানজট। তবে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সহায়তায় বেলা ২টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু এই যানজটের রেষ গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা যায়।

রামপুরা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো: আরিফ গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক ছেড়ে দিয়েছে। তবে এই যানজটের রেষ কাটতে কিছুটা সময় লেগেছে। সন্ধ্যার পর থেকে সড়কে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করছে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই সড়কে রমজান বাসের ধাক্কায় সাজিদ হোসেন নামে এক কিশোর নিহত হয়। সে একটি মোটরসাইকেল কেনাবেচার দোকানে কাজ করত। এ ঘটনার পর শনিবার সন্ধ্যায় রমজান পরিবহনের কয়েকটি বাস আটকে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
বাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হয়রানি : গতকাল রাজধানীর মৌচাকে লাব্বাইক পরিবহনে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীর সহপাঠী ও অন্য শিক্ষার্থীরা। হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। তখন বাসচালক ও হেলপার উল্টো তাকে হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। তিনি বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে মৌচাক মোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে মৌচাক মোড় থেকে লাব্বাইক পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসে সে সময় প্রচণ্ড ভিড় ছিল। বাসায় যাওয়ার তাড়া থাকায় তিনি ভিড় ঠেলে বাসে উঠেছিলেন। বাসটি আনসার ক্যাম্প এলাকায় গেলে সেখান থেকে একজন যুবক বাসে ওঠেন।
ছাত্রীর অভিযোগ, বাসে ওঠে ওই যুবক তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় তিনি ওই যুবককে দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন। পরে ছাত্রী বুঝতে পারেন ওই যুবক ইচ্ছে করেই তাকে স্পর্শ করছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি জোরালো প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে পথে বাসচালক ও হেলপার তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেন।

তিনি বলেন, ‘আমি জোর করে ওই বাসে আবার উঠি। কিন্তু তারা আমাকে বিশ্রী ভাষায় গালাগাল করেন। বাসে থাকা অনেক নারী যাত্রী বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলছিলেন না। বাধ্য হয়ে আমি কাজলা এলাকায় নেমে যাই।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘লোকাল বাসে হ্যারাসমেন্ট, বন্ধ করো বন্ধ করো’ সেøাগান দেন। তা ছাড়া তাদের হাতে ‘বোন তোমার ভয় নেই, সাহস হবে অস্ত্র/অন্যায় হবে ধ্বংস’, ‘বাস-রাস্তা, নারীর জন্য নিরাপদ হোক সব জায়গা’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
এ বিষয়ে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রক্টর ড. মৃত্যুঞ্জয় আচার্য্য বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুপুরের পর খিলগাঁও থানায় আমরা বসেছিলাম। সেখানে লাব্বাইক পরিবহনের মালিক ও প্রতিনিধিরা ছিলেন। যে চালক-হেলপার ছাত্রীকে হেনস্তা করেছিলেন, তারা মুচলেকা দিয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের যেসব দাবি সেগুলো বাসমালিক কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছেন।
ছাত্রী হয়রানিকারি যুবকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সে জন্য অজ্ঞাত হিসেবে তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ছাত্রী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।’

 


আরো সংবাদ



premium cement