১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`

চট্টগ্রামে চিন্ময়কাণ্ডে সংঘর্ষে জড়ানো ৬৩ আইনজীবীর জামিন

-

আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সঙ্ঘের (ইসকন) সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানো নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে তিন ঘণ্টা প্রিজনভ্যান আটকে রেখে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি ৬৩ আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
গতকাল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে ৬৩ আইনজীবী আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, চিন্ময়ের ঘটনায় কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনটি মামলা করেছে। শহীদ অ্যাডভোকেট আলিফের বাবা হত্যা মামলা করেছেন, আর আলিফের ভাই বাদি হয়ে আরেকটি ভাঙচুরের মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি হিসেবে থাকা ৬৩ জন আইনজীবীর পক্ষে আমরা জামিনের দরখাস্ত করেছিলাম। আদালত শুনানিতে মামলার চার্জশিট বা পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমরা আদালতের আদেশে সন্তুষ্ট।
এ দিকে জামিন আদেশের পর খুনের শিকার সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার চেয়ে বিপুল আইনজীবী আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তবে জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে পুরো আদালত প্রাঙ্গণ জুড়ে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিপুল পুলিশ, র‌্যাব সদস্য আদালত প্রাঙ্গণে মোতায়েন ছিল।

জামিন আদেশের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে বাদির আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, যাদের জামিন দেয়া হয়েছে, তারাই ছিলেন ঘটনার উসকানিদাতা। বিস্ফোরক আইনের মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে আসামিদের জামিনের নজির নেই। কিন্তু আজ আদালত এ মামলায় ৬৩ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ ধরনের আদেশে আমরা ক্ষুব্ধ।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ অক্টোবর চিন্ময়ের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদীঘির পাড় থেকে কোতোয়ালি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে চিন্ময় অনুসারীরা নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে। আইনজীবী খুনের ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদি হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।


আরো সংবাদ



premium cement