২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

স্বর্ণ বিক্রির টাকায় চোরচক্রের আয়েশি জীবনযাপন

বিক্রয়কর্মীসহ গ্রেফতার ৪
-

রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনায় ওই দোকানের বিক্রয়কর্মীসহ চোর চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় চুরি যাওয়া স্বর্ণ বিক্রির পাঁচ লাখ টাকাসহ ৫২ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন, চুরির পরিকল্পনাকারী ও ওই দোকানের বিক্রয়কর্মী হিমেল মিয়া (২০), মাশফিক আলম (২৮), তার স্ত্রী আক্তার ইতি (২৭) ও মাশফিকের শ্বশুর আব্দুর জব্বার (৭০)।
গত শনিবার তাদের গ্রেফতারের পরদিন গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানান সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) ডিআইজি এস এন মো: নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঢাকার মৌচাক মার্কেটে আসিফ জুয়েলার্সে বিগত চার বছর ধরে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে আসছিল হিমেল মিয়া। হিমেল প্রথমে ছিল দোকানের ক্লিনার। তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা ও বিশ্বস্ততার জন্য দোকানের সেলসম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। হিমেল দোকানের সেলসম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরই সোনা চুরি করার অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করে এবং সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। তার এ পরিকল্পনার কথা বন্ধু মহলে আলাপ করলেও বন্ধুরা তাকে এই কাজ করতে নিষেধ করে। পরে হিমেল সোনা চুরির বিষয়টি নিয়ে পূর্বপরিচিত ফারজানা আক্তার ইতির সাথে আলোচনা করে এবং এক সাথে বেশি সোনা হাতে পেলে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একমত হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩০ অক্টোবর হিমেল কারখানা থেকে আনুমানিক ৫৯ ভরি সোনা নিয়ে পালিয়ে যায়। তার এই কাজে সহযোগিতা করে বন্ধু মাশফিক আলম (২৮), মাশফিকের স্ত্রী আক্তার ইতি (২৭) ও শ্বশুর আব্দুর জব্বার (৭০)। ’

ডিআইজি নজরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘দোকানে না আসায় এবং হিমেলের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আলিমুদ্দিন নিশ্চিত হন যে হিমেল সোনা চুরি করে পালিয়েছে। এ ঘটনায় আসিফ জুয়েলার্সের মালিক আলিমুদ্দিন বাদি হয়ে রমনা থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন এবং সিআইডির কাছে সোনা উদ্ধারের উদ্দেশ্যে একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগ পাওয়ার পর সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। এদিকে পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে আসামি মাশফিক তার স্ত্রী ইতির কাছে রাখা সোনার বার নিয়ে ময়মনসিংহ সদরে মাশফিকের শ্বশুর আব্দুর জব্বারের কাছে যায়। যাতে তারা ধরা না পড়ে সেজন্য আব্দুল জব্বার, হিমেল ও মাশফিক সোনার বারটি তিন টুকরো করে। সেখান থেকে একটি টুকরা (৭ ভরি) নিয়ে মাশফিক ময়মনসিংহের স্থানীয় সোনার দোকানে বিক্রি করে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা পায়।’
এরপর মাশফিক স্বর্ণ বিক্রির টাকা নিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে যান। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সেখানে তার অবস্থান শনাক্ত করে প্রথমে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর মাশফিকের দেয়া তথ্যে মাশফিকের স্ত্রী ফারজানা আক্তার ইতিকে রামপুরা মৌলভীটেকের বাসা থেকে গ্রেফতার ও ডিপ ফ্রিজের ভেতর থেকে দুটি সোনার টুকরা (১৯ ভরি) এবং সোনা বিক্রির ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। ইতির দেয়া তথ্য মতে পরে ময়মনসিংহে অভিযান করে ইতির বাবা আব্দুর জব্বারকে ময়মনসিংহ সদর থেকে গ্রেফতার করা হয়। আব্দুল জব্বার জানান, হিমেলকে তিনি তার ভাতিজার গৌরীপুরের বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন।
সাইবার পুলিশের অন্য একটি টিম ময়মনসিংহ গৌরিপুর বোকাইনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হিমেলকে গ্রেফতার করে এবং তার কাছ থেকে ৩৩ ভরির একটি সোনার বার এবং সোনা বিক্রির টাকায় কেনা এক লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের রচযড়হব ১৫ চৎড় মোবাইল উদ্ধার করে। গ্রেফতারের পর এই চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে নজরুল বলেন, ‘গ্রেফতাররা অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। বর্তমানে মামলাটি সাইবার পুলিশ সেন্টারে তদন্তাধীন।’

 


আরো সংবাদ



premium cement