২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
ঠিকাদারকে ৬ কোটি টাকার কাজ

জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ডিজি ও সচিবের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ

-

সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে পছন্দের ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়ার মাধ্যমে ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ট্রাস্ট সচিবের বিরুদ্ধে ৫০ লক্ষাধিক টাকার আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে তড়িঘড়ি করে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা তদবির করেন। এরপর ৫ আগস্ট আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও আর্থিক সুবিধা নিয়ে আওয়ামী সরকারের আমলে একচেটিয়া কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ পাওয়া ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই কার্যাদেশ দেয়ার সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত ৯০টি প্রকল্প মূল্যায়ন শীর্ষক প্রকল্পের কনসালটিং ফার্ম নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ফিক্সড বাজেট মেথডে প্রকল্পটির প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬০০ টাকা। দরপত্রে গত ৫ মে’র মধ্যে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট, ইওআই জমা দিতে বলা হয়। এরপর গত ১৪ জুলাই তড়িঘড়ি করে সীমিতসংখ্যক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক বাছাই তালিকা করে তাদের কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাবনা জমা দিতে বলা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের এক কর্মকর্তা জানান, শর্ট লিস্টের পরই প্রকল্পটির কার্যাদেশ পেতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের তদবির শুরু হয়। ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজধানীর বেইলী রোডের একটি রেস্টুরেন্টে বসে একাধিকবার আগ্রহী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে দেনদরবার করে অবশেষে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রকল্পটি ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট ডিজাইন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড, ডিপিডিএস ও হাউজ অব কনসালট্যান্ট লিমিটেড নামক জয়েন্ট-ভেঞ্চার কোম্পানিকে দেয়ার বন্দোবস্ত হয়।

জানা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিপিডিএস আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যবহার করে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে শত শত কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ট্রাস্টের এক কর্মকর্তা জানান, দরপত্র আহ্বানের পর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন বেশ কয়েকবার ট্রাস্টে এসেছেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজেও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য রাজধানীর বেইলী রোডে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে দর কষাকষি করেন। অবশেষে ৫০ লাখ টাকায় প্রকল্পটি ডিপিডিএসকে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম একজন ঘুষখোর, দুর্নীতিপরায়ণ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের একনিষ্ঠ কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া তিনি কোনো বিল পাশ করেন না। ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা ১৮তম ব্যাচের ওই কর্মকর্তার সহযোগী ট্রাস্টের সচিব মনিরুজ্জামান। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই ট্রাস্টের বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্পই ছিল হরিলুটের কারবার।
এ বিষয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। এরপর প্রশ্ন করতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।


আরো সংবাদ



premium cement