২৫ বছর নির্বাচনবিহীন বাংলা একাডেমি
- সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক
- ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০৫
আমলাতন্ত্রের জালে ২৫ বছর ধরে নির্বাচনবিহীন বাংলা একাডেমি। ফেলো ও সাধারণ পরিষদের মাধ্যমে নির্বাহী পরিষদ গঠনে নিয়ম থাকলেও তা চলছে নির্বাহী পরিষদ পদাধিকারবলে মনোনীত সদস্যদের দিয়ে। কর্মচারীদের নির্বাচন হলেও ২৫ বছর ফেলো সদস্যদের নির্বাচন দেয়া হয় না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনের মাধ্যমে একাডেমির ফেলোরা তিনজন ফেলো ও সাধারণ পরিষদের সদস্যরা চারজনকে নির্বাচিত করবেন। এই সাতজনই নির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। কিন্তু এই সাত নির্বাচিত সদস্য না থাকায় অনেক দিন ধরে নির্বাহী পরিষদ চলছে শুধু পদাধিকারবলে ও মনোনীত ১২ সদস্য দিয়ে। এই ১২ জনের মধ্যে দুজন পদাধিকারবলের সদস্য। দুইজন নির্বাহী পরিষদ মনোনীত সদস্য। আর আটজন সরকার মনোনীত সদস্য।
বাংলা একাডেমি আইনের ২৩ নম্বর ধারাটি নির্বাহী পরিষদ বিষয়ে। এর ১ নম্বর উপধারা অনুযায়ী, মোট ১৯ সদস্য নিয়ে নির্বাহী পরিষদ গঠিত-পরিচালিত হবে। ৩ নম্বর উপধারায় আছে, নির্বাচিত সদস্যরা নির্বাচিত হওয়ার পর অনুষ্ঠিত নির্বাহী পরিষদের প্রথম সভার তারিখ হতে ৩ বছর মেয়াদের জন্য পরিষদের সদস্য হবেন। তারা দুই মেয়াদের বেশি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন না।
বাংলা একাডেমির তথ্যমতে, নির্বাহী পরিষদের সবশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। তবে বাংলা একাডেমি আইন (২০১৩) অনুযায়ী, এই নির্বাচন ৩ বছর পরপর হলে সে হিসেবে এই পর্যন্ত আটটি নির্বাচন হওয়ার কথা।
জানা যায়, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা ২০২১ সালে একাডেমিতে আসার পরই নির্বাচনের প্রস্তাব দেন। নির্বাচনের নীতিমালার খসড়া করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় নির্বাচনের বিধিমালা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু আজও তার বাস্তবায়ন হয়নি।
এ নিয়ে একাধিক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের ভাষ্য, বাংলা একাডেমি একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শুরু হয়েছিল। কিন্তু বিগত সময়ে যারাই ক্ষমতায় এসেছেন তারা এ প্রতিষ্ঠানকে সঠিক জায়গায় থাকতে দেননি। বিশেষ করে এরশাদ পতনের পর সবাই প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ যথাযথ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রাখেনি। তাই তারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমলাতান্ত্রিক করে তুলেছে। ফলে নিয়ম ভঙ্গ করে বছরের পর বছর তা নির্বাচনবিহীন চলছে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আছে নির্বাচন দেয়ার। এই বছর হয়তো হবে না। আগামী ফেব্রুয়ারির পরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। অন্য দিকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: আতাউর রহমান বলেন, কেন নির্বাচন হয়নি বিষয়টি আমি ভালো করে জানি না।
বাংলা একাডেমি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তারা চাইলে এসব কাজ করতে পারে। এতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কোনো বাধা নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা