২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
হবিগঞ্জে আন্দোলনে গুলিতে আহত

মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে এখন যন্ত্রণার সমুদ্রে সালেহ আহমেদ

-

হবিগঞ্জে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সালেহ আহমেদ এখনো হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। মৃত্যুর কবল থেকে ফিরে এসেছেন ঠিকই; কিন্তু শরীরে বুলেট থাকায় স্বস্তি পাচ্ছেন না কোনোমতেই। তারপরও খুশি তার যন্ত্রণার বিনিময়ে হলেও দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে।
চিকিৎসকরা প্রথমদিকে তার বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে এখন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। কিন্তু বুকের গুলি বের করতে শিগগিরই তার শরীরে জটিল অস্ত্রোপচার করা হবে। প্রয়োজন অনেক অর্থের। তাই সালেহের স্ত্রী-সন্তানরা অনেকটাই দিশেহারা।
সালেহ আহমেদ (৪৫) হবিগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের রাজনগরের বাসিন্দা। বাবা ফজল মোহাম্মদ এবং মাতা মোছা: খোদেজা বেগম। দুইজনের কেউই আর বেঁচে নেই।
স্থানীয়রা জানান, গত ৪ আগস্ট হবিগঞ্জে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকেন সালেহ আহমেদ। প্রথমদিকে তাকে সবাই মৃত বলে ধারণা করে কেউ এগিয়ে আসেনি। কিছুক্ষণ পর শ্বাস নিতে দেখেন কয়েকজন ছাত্র। তখন তাকে দ্রুত প্রথমে হবিগঞ্জ সদর পরে সিলেটের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটারে থাকতে হয়েছে অনেক দিন। তবে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তার সুচিকিৎসা হচ্ছে না। এখনো তার শরীরে বুলেট রয়ে গেছে। বুলেটের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
চিকিৎসকরা বলেছেন, সালেহ কিছুটা সুস্থ হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শরীর থেকে বুলেট বের করা হবে। এ জন্য প্রয়োজন প্রচুর অর্থের। আবার ঝুঁকিও রয়েছে অনেক।
গুলিবিদ্ধ সালেহ বিএনপির সক্রিয় কর্মী। হবিগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির অর্থ সম্পাদক। তিনি দলের প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন বলে দাবি করছেন বিএনপির জেলা পর্যায়ের নেতারা। এদিকে সালেহর স্ত্রী সন্তানরা তাদের পরিবার ও চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এরই মধ্যে তারা তাদের সম্বল দুটি গরু বিক্রি করে সালেহের চিকিৎসা করিয়েছেন। তবে সুস্থ হয়ে উঠতে এখনো অনেক দেরি। চিকিৎসার জন্য কেউ কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী হালিমা খাতুন। তিনি জানান, আমার স্বামী আজ প্রায় দেড় মাস ধরে বিছানায় শুয়ে বুলেটের যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। এখনো শরীরে গুলি রয়েছে। বের করতে সময় লাগবে বলে চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন। তবে অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার স্বামীর চিকিৎসায় অনেকেই সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, দু’টি গরু বিক্রি করে স্বামীকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছি। এখনো মূল অস্ত্রোপচারটা করা হয়নি।
গুলিবিদ্ধ সালেহ আহমেদ জানান, আমি বুলেটের যন্ত্রণায় বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছি। বুকে এখনো বুলেট রয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলেছেন অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করতে হবে, না হয় ঝুঁকি থেকে যাবে। এ অবস্থায় আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই। আমি সুস্থ হয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আগের মতো করে বাঁচতে চাই। এখন বলতে পারি স্বৈরাচারী সরকার দেশ থেকে বিদায় হয়েছে। এটিই এখন আমার আনন্দ।
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এনামুল হক সেলিম জানান, সালেহ আহমেদ বিএনপির সক্রিয় কর্মী। আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমরা তার চিকিৎসার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার শরীরে বড় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। এ জন্য অনেক আর্থিক সহযোগিতার লাগবে। তিনি সবাইকে সালেহের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


আরো সংবাদ



premium cement
টেকনাফে ২ লাখ ৪৮ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার ইসকন নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আইনজীবী আলিফের জানাজায় হাসনাত-সারজিস জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা : খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করবেন মির্জা ফখরুল ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে আবারো রিমান্ডে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল-কামরুল শিল্পপতির বাড়িতে ডাকাতি : ৭ লাখ টাকা, ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ২৪ ঘণ্টায়ও মহাসড়ক ছাড়েনি ডিইপিজেডের লেনী ফ্যাশনের শ্রমিকরা

সকল