২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নজরুল স্মরণে সিএনসির আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

-

সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার (সিএনসি) গত শনিবার ‘আসুন নজরুলীয় আলোয় উদ্ভাসিত হই’ এই শিরোনামে রাজধানীর কবিতা ক্যাফেতে বাদ মাগরিব এক জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সিএনসির সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম বদরুদ্দোজা (নজরুল গবেষক) সভাপ্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান মেহমান ও সম্মানিত মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকার ও ইতিহাসবিদ মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীতজ্ঞ ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. সুকোমল বড়ুয়া। বিশেষ মেহমান ছিলেন দেশবরেণ্য বাচিক শিল্পী অ্যাডভোকেট নাসিম আহমেদ ও প্রফেসর শায়লা আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত কথা রাখেন বিশিষ্ট চিকিৎসাবিদ, কলামিস্ট ও লেখক ডা: শাহ মো: বুলবুল ইসলাম এবং একক আলোচক ছিলেন কবি, সাহিত্যিক ও সম্পাদক জাকির আবু জাফর।
প্রধান মেহমান তার বক্তব্যে সিএনসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন এখন সময়টাতো একেবারেই নজরুলের। ভাঙা ও গড়ার সময়। নজরুল শুধু পাঠ করার বিষয় নয়। অনুভবের বিষয়, উপলব্ধির বিষয়। প্রাতঃকালে নজরুল নতুন আবহে, নতুন প্রণোদনায় উদ্ভাসিত হচ্ছেন। এদিক থেকে মনে হয় নজরুল এই নশ্বর পৃথিবীর জন্য চিরন্তন ও চিরভাষ্য। শিক্ষাব্যবস্থাসহ আমাদের জীবনে নজরুলকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হবে। উন্নত মম শিরের জন্য এটা অনিবার্য।
একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল উল্লেখ করেন, কলকাতায় এয়ারপোর্ট থেকে বের হলেই নজরুলকে দেখা যায়। আর বাংলাদেশে নজরুলকে খুঁজতে হয়। নজরুলকে নানা অভিধায় অভিহিত করা হয়। এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি রুটি বানিয়েছেন না পেশাজীবী হিসেবে কী করেছেন সেটাতো আমাদের বিষয় না। বিষয় হলো তিনি কী করেননি? বিষয় হলো দেশ, জাতি, সমাজ, স্বাধীনতা, প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা, কাব্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সংবাদপত্র, চলচ্চিত্র, চিত্রনাট্য, রাজনীতি, জাগরণ, শিশুতোষ, নারী অধিকার কোনটা তিনি করেননি? তাকে, এই মহামানবকে কেন এত ক্ষুদ্র পরিসরে স্মরণ করা হয়?
একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, আদর্শ, মতবাদ ও রাজনীতি নির্বিশেষে নজরুল আমাদের এবং সারা বিশ্বের। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের নজরুল একজন অবিসংবাদিত সত্তা। তাকে স্মরণ করা আমাদের অস্তিত্বের বিষয়। তার স্বল্পস্থায়ী জীবনের বিপুল ও বিশাল কর্ম মানবজাতির জন্য বিশাল সম্পদ।

একক বক্তৃতায় বরেণ্য কবি জাকির আবু জাফর বলেন নজরুলের অনেক পদ্য-গদ্য-গান উল্লেখ করে প্রমাণ করেন যে নজরুল সব আসমানি কিতাব ও ধর্মগ্রন্থসহ প্রকৃতি ও বিশ্বকে অধ্যয়ন করেছন। নজরুলকে যদি আমরা তার স্থলে প্রতিস্থাপন করি, গবেষণা করি এবং অনুধাবন করার চেষ্টা করি তাহলে নজরুলকে হয়তো সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব।
স্বাগত বক্তব্যে বরেণ্য নজরুল ভক্ত ডা: শাহ মো: বুলবুল ইসলাম অভাবিতভাবে নজরুলের নানা গান ও কবিতা আবৃত্তি করে বলেন, আমাদের জাতিসত্তা ও আত্মপরিচয়ের ঠিকানা খুঁজতে হলে নজরুলের কাছে অবশ্যই যেতে হবে।
নানা ব্যঞ্জনায় অনুষ্ঠানটি জমজমাট হয়ে ওঠে। আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন দেশবরেণ্য বাচিক শিল্পী অ্যাডভোকেট নাসিম আহমেদ, প্রফেসর শায়লা আহমেদ ও লিলি হক। কথায় অংশগ্রহণ করেন প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, সাবেক তথ্যসচিব এ এম এম নাসির উদ্দিন। লেখা পাঠ করে শোনান প্রিন্সিপাল সাব্বির উদ্দিন আহমদ, সঙ্গীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী মাসুদ রানা, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সৈয়দ আলী আহসানের নাতনি শিক্ষক ও সংস্কৃতিজন সৈয়দা তাহমিনা কমর।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহফুজুর রহমান চৌধুরী, কর্নেল (অব:) আশরাফ আল দীন, ড. মোহাম্মদ জমির হোসেন, কবি আফসার নিযাম, অ্যাডভোকেট কাজী সিফাত, মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, এমদাদুল হক চৌধুরী, মাহবুবুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন সিএনসির মিডিয়া এক্সিকিউটিভ ইসমাইল হোসেন। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement