০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

খিলগাঁওয়ে বন্ধ হয়নি ডিশবাবুর চাঁদাবাজি, খোলস পাল্টে চলছে ত্রাসের রাজত্ব

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছিলেন
-


বন্ধ হয়নি রাজধানীর খিলগাঁওয়ের আতঙ্ক ডিশবাবুর চাঁদাবাজি। বরং খোলস পাল্টে নতুনভাবে তিনি সাজিয়েছেন তার ত্রাসের রাজত্ব। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সাবের হোসেন চৌধুরীর ডানহাত হিসেবে খ্যাত বাবু এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি দখলবাজি, অটো রিকশার টোকেন বাণিজ্য ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর নাম ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে তার পুরনো অপকর্ম। এ ব্যাপারে খোদ স্থানীয় বিএনপি সভাপতি থানায় অভিযোগ করেছেন। ইতোমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে বিএনপির কিছু নেতাকর্মীকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। তুবও থামছে না তাদের অপকর্ম। গত জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তিনি হামলা চালিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাবু ডিশ ব্যবসায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে। যার কারণে তার নামের আগে ডিশ শব্দটি বসানো হয়। ডিশ ব্যবসার পাশাপাশি সাবের হোসেন চৌধুরীর কাছের লোক হওয়ার কারণে ইন্টারনেট, ময়লার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, দখলবাজিতে পুরো এলাকায়ই তিনি একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন। সেই সময়ই বাবুর নামে বিভিন্ন অভিযোগে অর্ধশত মামলা দায়ের হয়।

কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাতারাতি দল পাল্টে ফেলেন ডিশবাবু। ওই রাতেই ডিশবাবু ও খিলগাঁও থানার তিন নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি হালিমের সান্নিধ্যে তাদের সহযোগীরা পুরো এলাকার নির্মাধীন ভবনের ইট, রড, সিমেন্ট লুটপাট চালায়। এ ছাড়াও চারটি বড় বড় জায়গা দখল করে নেন। তাদের দলে রয়েছে রফিকুল ইসলাম, মাইনুর, সমশের ওরফে ডাকু সমশের, জিন্নাত, অন্তর, বাবু ওরফে খলিল বাবু, টাকলা বাবু, রিপন, ডিশ বাবুর আপন ভাই কাওসার, পনির, শফিক, গুলবাগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মহসিন আলম ঝুটন, ফরহাদ,কামরুল ও জয়নাল।
খিলগাঁওয়ের গোড়ান এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, বর্তমানে এলাকার ইন্টারনেট ব্যবসা, গ্যাসের ব্যবসা, ময়লা ব্যবসা, অটো রিকশার টোকেন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এই সিন্ডিকেট। মূলত বিএনপি নেতা হালিম আধিপত্য ধরে রাখতে আওয়ামী লীগ নেতা হওয়া সত্ত্বেও কৌশলে ডিশবাবুকে তার সাথে নেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, আগে আওয়ামী লীগের নামে যেসব লোকজন অপকর্ম করত এখন তারাই বিএনপির নামে করছেন। তিনি বলেন, এত মামলা থাকার পরও বর্তমান সময়ে কিভাবে এসব সন্ত্রাসী প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন প্রশ্ন করেন আব্দুর রহমান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আমার ওয়ার্ডের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল হালিম আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এমনকি ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে নিয়ে নানা অপকর্ম করছে। বিষয়টি দলের সিনিয়র নেতাদের অবহিত করা হলে দল থেকে হালিমকে বহিষ্কার করা হয়। এর পরও দলের নাম ভাঙিয়ে নানা অপকর্ম করেই যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি থানায় কথা বলেছি।
অভিযুক্ত আব্দুল হালিম বলেন, তিনি কোনো চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নন, ডিশবাবুও কোনো চাঁদাবাজি করেন না। তিনি জমির ব্যবসা করেন। আওয়ামী লীগের সময় ডিশবাবু চাঁদাবাজি করতেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি আমি বলতে পারব না। তবে এ ব্যাপারে ডিশবাবুর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খিলগাঁও থানার ওসি আবু দাউদ খান বলেন, ডিশবাবুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তার বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বিগত ছাত্র জনতার আন্দোলনেও হামলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 


আরো সংবাদ



premium cement