০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১,
`
প্রকল্প ব্যয় ৪৮ কোটি টাকা

আলোর মুখ দেখছে কর্ণফুলী দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্ট

কর্ণফুলী দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্ট : নয়া দিগন্ত -


আলোর মুখ দেখছে বহুল প্রত্যাশিত কর্ণফুলী দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্ট। আগামী মার্চেই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার মধ্য দিয়ে চালু হচ্ছে প্লান্টটি।
আর এ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্টি উৎপাদনে গেলে চট্টগ্রাম জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোর হাজার হাজার খামারির উৎপাদিত দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ সহজ হবে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যায় (সাবেক পটিয়া) তিন একর জায়গার ওপর আধুনিক এ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাটির নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৯৫ ভাগ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিল্ক ভিটা সমবায় সমিতি উদ্যোগে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রক্রিয়াজাতকরণ অত্যাধুনিক এ প্লানটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত এ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাটি উৎপাদনে গেলে চট্টগ্রাম জেলাসহ আশপাশের কয়েক জেলার হাজার হাজার খামারির উৎপাদিত দুধ নিয়ে যত বিড়ম্বনা ছিল তার অবসান ঘটবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। একই সাথে ওই প্লান্টে বা প্রক্রিয়াজতকরণ কারখানায় প্রায় ৩০ হাজার লিটার দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্ভব হবে।

পাশাপাশি কারখানাটি চালু হওয়ার সাথে সাথে চট্টগ্রামবাসীসহ আশপাশের জেলাগুলোর খামারিদের মধ্যে আরো উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে। গতকাল যোগাযোগ করা হলে ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আগামী বছরের মার্চ মাসেই কারখানাটি পুরোদমে চালু করার প্রত্যাশা করছেন তিনি।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে মিল্ক ভিটা সমবায় সমিতির উদ্যোগে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল।
প্রকল্পের স্থান নির্ধারণ ও প্রকল্পের জায়গাসংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে তিন একর ভূমি ক্রয় করা হলেও প্রকল্প কাজ ধীরগতিতে এগোয়। পরবর্তীতে প্রকল্প কাজ পুরোদমে শুরু হলেও বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসজনিত কারণে প্রায় আড়াই বছর কারখানাটির নির্মাণকাজ বাধাগ্রস্ত হয়।
গতকাল দুপুরে সরেজমিন দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ নির্মাণাধীন প্লান্টি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়। দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ মূল প্লান্টির নির্মাণকাজ বেশ এগিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৬ হাজার স্কয়ারফুটের মূল প্লান্টভবন নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। সদৃশ্য হয়েছে ওই প্লান্টের পাশেই প্রায় চার হাজার স্কয়ারফুটের একটি ইউটিলিটি ভবন তার নির্মাণকাজও সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। প্লান্টের অপর পাশেই শেষ হয়েছে প্রায় এক হাজার ৫০০ স্কয়ারফুটের একটি দৃষ্টিনন্দন রেস্ট হাউজ নির্মাণকাজও।

প্রত্যাশা করা হচ্ছে আধুনিক পদ্ধতির দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্টি উৎপাদনে গেলে চট্টগ্রামের দুধ চট্টগ্রামেই প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হবে এবং ওই কেন্দ্রেই মাখন, পনির ও বাটারসহ দুধ জাতীয় পণ্য প্রক্রিয়াজাত করা যাবে।
পূর্ণাঙ্গ দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্টিতে চট্টগ্রাম বিভাগের সব সিলিং প্লান্টের দুধ এনে তা প্রক্রিয়াজাত করে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা সহজ হবে।
জানা গেছে এলাকার শত শত খামারির দাবির পরিপ্রক্ষিতে ২০১৩ সাল (সাবেক পটিয়ার) বর্তমানে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যায় একসাথে ১০ হাজার লিটার দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।
এ কেন্দ্রে নিয়মিত দুধ সরবরাহ করে আসছিল পটিয়া ও কর্ণফুলী উপজেলার শত শত খামারি। দুধ শীতলকরণ প্লান্টে প্রায় ১০ হাজার লিটার দুধ সংরক্ষণ করে তা ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা থেকে তা প্রক্রিয়াজাত করে আবার চট্টগ্রামে এনে বাজারজাত করা হয়। এতে প্রতি লিটার দুধে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়। এ কারণে দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণে অতিরিক্ত অর্থ খরচের জন্য এলাকাবাসী তাদের উৎপাদিত দুধের কাক্সিক্ষত মূল্য না পেয়ে বছরের পর বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছিলেন।

এ কারণেই এলাকার শত শত খামারিরা ২০১৩ সাল থেকেই দাবি করে আসছিলেন একটি পূর্ণাঙ্গ আধুনিক দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা প্লান্ট স্থাপনের।
এলাকাবাসী খামারিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মিল্ক ভিটা সমবায় সমিতির উদ্যোগে অবশেষে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
কর্ণফুলী ডেইরি ফার্মারস ফোরামের সভাপতি মো: ইকবাল জানান, এলাকার গো খামারিদের দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি জানান এই প্লান্টি বাস্তবায়ন হলে এলাকার খামারিসহ আশপাশে জেলাগুলোর খামারিরাও সরাসরি আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন।
তবে বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে সঙ্গতি রেখে মিলভিটা সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষ উৎপাদিত দুধের মূল্য নির্ধারণ করে দিলে খামারিরা লাভবান হবেন।
ওই প্রকল্পের পিডি জানিয়েছেন আগামী বছরের মার্চ মাসেই চালু হবে এই অত্যাধুনিক দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্লান্টি। আর এটি চালু হলে এলাকার শত শত খামারি আশপাশের জেলারও খামারিরা উপকৃত হবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
পাহাড়চূড়ায় ভাসছে ‘জাহাজ’ রামুর স্বপ্নতরী পার্ক মিত্ররা ইসরাইলের সাথে ‘যুদ্ধে পিছ পা হবে না’: ইরান সংস্কার কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি আশানুরূপ নয় : কর্নেল অলি ডিবি কার্যালয়ে থাকবে না আর কোনো আয়নাঘর ও ভাতের হোটেল : মল্লিক সাগর উত্তাল, পায়রা বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত নতুন বিপ্লবকে মানুষের সত্যিকারের মুক্তির বিপ্লবে পরিণত করতে হবে : সেলিম উদ্দিন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ আগামী দিনে দেশে নেতৃত্বে দিবে ইসলামী ছাত্রশিবির : আব্দুর জাব্বার আশুলিয়ায় কাজে ফিরেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ৪ বাংলাদেশী আটক চকরিয়ায় ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাইক আরোহী শিক্ষার্থী নিহত

সকল