জোর করে দখলে নেয়া মাঠ পেতে শেকৃবিতে মানববন্ধন
- শেকৃবি প্রতিনিধি
- ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৬
এরশাদ সরকারের আমলে জোর করে দখলে নেয়া শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) গবেষণা মাঠ (পুরনো বাণিজ্যমেলার মাঠ) ফেরত পেতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার পুরনো বাণিজ্যমেলার মাঠে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এ দিন বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী চত্বর থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সেকেন্ড গেট হয়ে পুরনো বাণিজ্যমেলার মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরবর্তী সময়ে সেখানে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা যায়, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘দি বেঙ্গল অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ (বিএআই) স্বাধীনতার পরে ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ নামে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ২০০২ সালে এটি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এখানে স্নাতক ডিগ্রি দেয়া হতো। সে হিসেবে এটিকে বাংলাদেশের তো বটেই, উপমহাদেশের ইতিহাসে অন্যতম প্রাচীন কৃষি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সে সময় প্রায় ৬০০ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এর অশিকাংশ জমিতেই এখন গড়ে উঠেছে সংসদ ভবন, পুরনো বিমানবন্দর, চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শুরু করে নানা সরকারি প্রতিষ্ঠান। পুরনো বাণিজ্যমেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম চললেও এরশাদ সরকারের আমলে সরকারি কাজ পরিচালনার জন্য মাঠটি দখলে নেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালে তৎকালীন সরকার এখানে সচিবালয় স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। ২০২২ সালে মাঠটিতে পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হয়নি। মাঝখানে পরিত্যক্ত মাঠটিতে বাণিজ্যমেলার আয়োজন হলেও ২০২২ সাল থেকে মেলা পূর্বাচলে স্থানান্তর করা হয়।
মাঠটির ইতিহাস জানাতে গিয়ে এন্টোমলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: রজ্জব আলী বলেন, স্বৈরাচার এরশাদ কেড়ে নিয়েছিল তৎকালীন কৃষি কলেজের মাঠটি। আমি তখন সাবেক ঢাকা কৃষি কলেজ (বর্তমানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)-এর ছাত্র (৪৭তম ব্যাচ) ছিলাম। প্রকৃত নাম ছিল বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট (বিএআই)। ওখানেই কাজী নজরুল ইসলাম হলটি টিনশেড আকারে ছিল, মসজিদ ছিল, স্টাফ কোয়ার্টার ছিল, পোলট্রি খামার ইত্যাদি ছিল। আজকের কলেজ গেইট সেই কৃষি কলেজের নামানুসারে হয়েছিল এবং আজকের ফার্মগেট তৎকালীন কৃষি ফার্মের নামানুসারেই হয়েছিল। আরো কত ইতিহাস অন্তরে গেঁথে আছে!
মানববন্ধন প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী আশিক আহমেদ বলেন, আগে আমাদের শুধু অনার্স ছিল, তাতেও গবেষণার জন্য জায়গা সঙ্কুলান হতো না। এখন আমাদের মাস্টার্স ও পিএইচডিও বিদ্যমান। টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গবেষণার জন্য জায়গা এখন একেবারেই নগণ্য, যা আমাদের পড়াশোনার জন্য যথেষ্ট নয়। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় যেহেতু গণভবনও সেখানে নেই, তাই আমাদের জায়গা আমরা গবেষণার জন্য ফেরত চাই।
মাঠ ফেরত পেতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং তার অনুলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা