ছাত্রীদের মেসেজ অশ্লীল ভিডিও পাঠাতেন রাবি শিক্ষক মনির উদ্দিন
- রাবি প্রতিনিধি
- ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, যৌন হেনস্তা, রেজাল্ট সিন্ডিকেট, শিক্ষার্থীদের ফেল করানোর ভয় দেখানোসহ মানসিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া গভীর রাতে ছাত্রীদের ভিডিও কল ও মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করা এবং অশালীন ভিডিও পাঠানোর প্রমাণ মিলেছে। এ নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ভিসির কাছে তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছেন বিভাগীয় শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেছেন, কারুশিল্প ডিসিপ্লিনে শিক্ষকস্বল্পতার কারণে প্রত্যেক ব্যাচের সব ব্যবহারিক ক্লাস ও মার্কিংয়ের দায়িত্ব একাই পালন করেন অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন। ফলে বিভাগে তিনি একনায়কতন্ত্র কায়েম করে শিক্ষার্থীদের ফেল করানোর হুমকি দিতেন। ক্লাসের সবার সামনে ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন এবং যৌক্তিক কারণ ছাড়াই রাত-বিরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও কল ও যৌন ঈঙ্গিতমূলক ভাষা ব্যবহার করে মেসেজ দিতেন।
গত ২০ জানুয়ারি এক ছাত্রীকে পাঠানো মেসেজ ও ভিডিও কলে দেখা যায়, তাতে তিনি লিখেছেন, ‘এক্সট্রা ক্লাস চলিতাছে, বালা না?’ ২০২০ সালের ৯ জুলাইয়ে আরেক শিক্ষার্থীকে লিখেছিলেন, ‘রাত কিন্তু ৩টা ৫৪ বাজে, আমি করি চৌকিদার, আপনি কই?’ আরেক নারী ছাত্রীকে লিখেছেন, ‘ঘুম নেই, একদম ফেইল করাই দিমু’। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে রাতে আরেক ছাত্রীকে একটি বাজে ছবি পাঠিয়ে বলেন, ‘এটা কি তুমি?’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, আমি প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর তার টার্গেটের শিকার হই। তিনি বিভিন্ন সময়ে আমাকে ফোন করে ব্যক্তিগত বিষয় হস্তক্ষেপ করতেন। জ্বর দেখার নাম করে হাতে, কপালে, মুখে, গলায় হাত দিতেন। ঊরু দেখিয়ে ঈশারা ইঙ্গিতে সেখানে বসতে বলতেন। আমি এই বাজে মানুষটার কঠিন শাস্তি চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ড. মনির উদ্দিনকে একাধিকবার কয়েকটা মোবাইল নম্বর থেকে কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি জবাব দেননি।
জানতে চাইলে গ্রাফিক্স ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলা ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর আমার কাছে ড. মনির উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ অনেক বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দেন এবং তার বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন। বিভাগের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আমি সেদিন বিকেলেই জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির মিটিং কল করি। সেখানে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। মিটিংয়ে কমিটির সবার পরামর্শে তাকে বিভাগের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা