২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার দীপঙ্কর

অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার দীপঙ্কর - নয়া দিগন্ত

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে প্রায় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে শাখাটির ক্যাশিয়ার দীপঙ্কর ঘোষ (৩৮) উধাও হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত ২৯ আগস্ট টাকা নিয়ে যাওয়ার পর তিনি আর ব্যাংকে না আসায় ২ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ওই শাখার ব্যবস্থাপক মো: ইউসুফ মিয়া মতলব উত্তর থানায় মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্ত দীপঙ্কর ঘোষ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপঙ্কর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দীপঙ্কর ঘোষ ব্যাংকে না এলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি জানান যে বাবা অসুস্থ, আসতে দেরি হবে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে না এলে আবারো তার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য তাহার স্ত্রী আখি সাহার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী বেলা ১২টার সময় অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা ত্যাগ করেন।’

আরো জানা যায়, বিকেল হয়ে গেলেও দীপঙ্কর ঘোষ ব্যাংকে উপস্থিত না হওয়ায় সেদিন ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরে তার কার্যকলাপ সন্দেহজনক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ছেংগারচর বাজার শাখা ব্যবস্থাপক মো: ইউসুফ মিয়া। পরে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টে থাকায় নগদ টাকা পরিমাণ যথাযথ আছে কিনা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) মতলব উত্তর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর (রোববার) জিডির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রির মাধ্যমে ভল্টের গ্রিল গেট কেটে এবং চাঁদপুরস্থ প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুব্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। পরে সকালের উপস্থিতিতে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী, তা এক কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। অর্থাৎ ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী গণনায় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।

মামলায় আরো উল্লেখ্য রয়েছে, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপঙ্কর ঘোষ বিগত কিছু দিন মাঝে মাঝে একটি কাঁধের ব্যাগ নিয়ে আসতেন এবং ওই ব্যাগ নিয়ে অফিস ত্যাগ করতেন। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকায় ব্যাংকের ভল্টের একটি চাবি তার কাছে থাকায় অপকৌশল অবলম্বন করেন এবং নিজে অথবা অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা ব্যাংকের ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ছেংগারচর বাজার শাখা ব্যবস্থাপক মো: ইউসুফ মিয়া জানান, ‘এ বিষয়ে আমি মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন।’

মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: ছানোয়ার হোসেন জানান, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা না পাওয়ার বিষয়ে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপঙ্কর ঘোষ ও অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মামলার তদন্ত প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement