ভারী বর্ষণ ও পাহাড় ধসে রোহিঙ্গাদের ৩৩টি ক্যাম্পে ১২০০ বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত
ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে- গোলাম আজম খান, কক্সবাজার অফিস
- ২০ জুন ২০২৪, ১৮:১৬
ভারী বৃষ্টিতে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলাদেশী দুই নাগরিকসহ ১০ জনের মৃত্যু এবং ১২ শতেরও বেশি বসতঘর বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, আগামী ২/৩ দিন পর্যন্ত মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কারণে পাহাড় ধসের আশংকা থাকায় জেলায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে মাইকিংসহ প্রচারণ চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসনের জানিয়েছেন, পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রশাসনের একাধিক দল মাঠে নেমেছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ সংশ্লিষ্ট এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলো।
কক্সবাজারে মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার। কখনো ভারী, আবার কখনো মাঝারি আকারের বৃষ্টির কারণে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাঁচটি স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে। এতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন স্থানীয় বাসিন্দা ও অপর আটজন রোহিঙ্গা।
মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত উখিয়ার ১, ৮, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই পাহাড় ধস ঘটে। এর মধ্যে ১-ওয়েস্ট নম্বর ক্যাম্পে ১ জন, ৮ নম্বর ক্যাম্পে ১ জন, ৯ নম্বর ক্যাম্পে ৩ জন, ১০ নম্বর ক্যাম্পে ৪ জন ও ১৪ নম্বর ক্যাম্পে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক সহায়তা দানকারী জাতিসঙ্ঘের সংস্থাগুলোর দেয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে প্রায় ৭ হাজার ৭৯৪ জন শরণার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যার মধ্যে আনুমানিক ১ হাজার ১৯১টি আশ্রয়ণ ক্ষতিগ্রস্ত বা বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান পানি ও ভূমিধসে শিক্ষাকেন্দ্র, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, মসজিদ, ল্যাট্রিন, পানির উৎস এবং গোসলখানার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রোহিঙ্গারা বলেছেন, এক দিনের ভারী বৃষ্টিতে এত বেশি প্রাণহানি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগে ঘটেনি। ক্যাম্পগুলোতে এখনো অসংখ্য রোহিঙ্গা পরিবার পাহাড় ও ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। নিরাপদ বসবাসের ব্যবস্থার দাবি তাদের।
এ নিয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, বুধবার পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ইতোমধ্যে ক্যাম্পে ঝুঁকিপূর্ণ ৫০০ পরিবার ও বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আরো যারা ঝুঁকিপূর্ণ আছে তাদেরও সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, কক্সবাজার জেলাব্যাপী ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বুধবার দুপুর থেকে চলছে মাইকিংসহ সচেতনামূলক প্রচারণা। জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়েও তৎপরতা চলছে। প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলার পাশাপাশি আগামী ২/৩ দিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা