ব্যাংক লুটপাট : রুমা পরিদর্শনে পিবিআইয়ের ৫ সদস্যের টিম
- বান্দরবান প্রতিনিধি
- ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০৩, আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০৯
বান্দরবানের সোনালী ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের ঘটনার তদন্তে কক্সবাজার থেকে পিবিআইয়ের পাঁচ সদস্যের একটি টিম এখন রুমা পরিদর্শন করছে। বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো: সৈকত শাহীন। তারা সোনালী ব্যাংকটির ভল্ট দেখেন। তবে কোনো টাকা খোয়া গেছে কি না- এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানাননি তারা।
জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, পিবিআই ও ব্যাংকের তদন্ত টিমের কাজ শেষে বলা যাবে ভল্ট থেকে টাকা খোয়া গেছে কি না।
এদিকে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি। তাকে উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকটি টিম অভিযান পরিচালনা করছে এলাকায়। অন্যদিকে ব্যাংক ম্যানেজারের মুক্তির দাবিতে রুমা উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন করেছে উপজেলা কমপ্লেক্সে। ঘটনার প্রতিবাদে রুমা উপজেলার সাথে বান্দরবানের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে সকাল থেকে। ব্যাংকে হামলার পর রুমায় এখন বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা। উপজেলা সদরে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের টহল বাড়িয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ জনগণের নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ- এর ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি সশস্ত্র দল উপজেলা কমপ্লেক্স ঘেরাও করে এবং সোনালী ব্যাংকে লুটপাট চালায়। ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি তারা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। মারধর করা হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এ সময় সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংকের ভোল্টটি ভাঙচুর করে।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ভল্টটি সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর করেছে। সেখানে থাকা টাকা-পয়সা নিয়ে যাওয়া হয়েছে কি না, তা এখনো জানা না গেলেও ওই সময় ভলটিতে এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা ছিল বলে তারা জানিয়েছেন। তদন্তের পরই এ বিষয়ে সবকিছু জানা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ তাদের তৎপরতা শুরু করে বান্দরবানে। তাদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত পাঁচ সেনা সদস্যসহ ২৭ জন নিহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে কেএনএফের ১৭ সদস্যকে। তাদের তৎপরতা বন্ধে গঠন করা শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে এ পর্যন্ত দু’বার সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধের সমঝোতা চুক্তি ও স্বাক্ষর হয়েছে। গত ৫ মার্চ রুমার ব্যাথেল পাড়ায় দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় শান্তি কমিটির সাথে। কিন্তু এই বৈঠকের এক মাসের মাথায় ব্যাংকে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।