২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

খাগড়াছড়িতে দুর্বৃত্তদের ব্রাশ ফায়ারে গৃহবধূ নিহত

-

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার সোনামিয়া টিলায় দুর্বৃত্তদের ব্রাশ ফায়ারে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। শুক্রবার গভীর রাতে ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আবদুল মালেকের বাড়িতে হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার সময় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মারা যান আবদুল মালেকের স্ত্রী মোরশেদা বেগম (৪৫)। এছাড়া হামলায় আহত হন তার ছেলে আব্দুল আহাদ (১১)। আব্দুল আহাদ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, রাত দেড়টার সময় উপজেলার বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামে আবদুল মালেকের বাড়িতে হামলা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি দল। সন্ত্রাসীরা আব্দুল মালেকের ঘর লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ব্রাশ ফায়ার করে। ৮ থেকে ১০ মিনিটের ব্রাশ ফায়ারে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল মালেকের স্ত্রী মোরশেদা বেগম (৪৫) এবং পাশে থাকা ছেলে আবদুল আহাদ (১১)।

এদিকে সন্ত্রাসীরা ফিরে যাওয়ার সময় পাশের কয়েকটি বাড়ি লক্ষ্য করে ব্রাশ ফায়ার করে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

গুলিবিদ্ধ মোরশেদা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে হাসপাতাল নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। অন্যদিকে আবদুল আহাদের বাম কানের ওপরে গুলি লাগে। তিনি দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার পর পার্বত্য নাগরিক পরিষদ দীঘিনালা শাখার নেতাকর্মীরা ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেমের মধ্যস্থতায় অবরোধ তুলে নিলে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়।
দীঘিনালা থানা পুলিশ মোরশেদা বেগমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

সোনামিয়া টিলা ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আবদুল মালেক জানান, আমি আমার স্ত্রী সন্তানসহ এক খাটেই ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ গুলির শব্দে আমি খাট থেকে মাটিতে শুয়ে পড়ি এবং আমার স্ত্রীকে খাট থেকে নামানোর চেষ্টা করি। ৮ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে শতাধিক রাউন্ড গুলি করে। আমার স্ত্রীর শরীরে বেশ কয়েকটি গুলি লাগে। প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করলেও তারা আসতে অনেক দেরি করে ফেলে। হাসপাতাল নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এ ঘটনায় আবদুল মালেক ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপকে দায়ী করেন।

এদিকে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের দীঘিনালা উপজেলার নেতা আল আমিন এবং মনছুর আলম হীরা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হামলার ঘটনায় ইউপিডিএফ প্রসীত পক্ষকে দায়ী করে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।

ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম চন্দ্র দেব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত মোরশেদা বেগমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া আহত আহাদ চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।


আরো সংবাদ



premium cement