দেশে ভারতের আনুগত্যের রাজনীতি আর ফিরবে না : ডা: তাহের

দেশে ভারতের আনুগত্যের রাজনীতি আর ফিরবে না মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের বলেছেন, ‘ইতিহাস বলে, কোনো স্বৈরাচার দেশ থেকে একবার পালিয়ে গেলে সে আর কখনো ফিরে আসে না। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও আর কখনো দেশে ফিরতে পারবে না।’

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী মডার্ন স্কুল অ্যান্ড মাদরাসার হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি প্রদান উপলক্ষ্যে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ডা: তাহের বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পরাজয় মানে আধিপত্যবাদী ভারতের পরাজয়। স্বৈরাচারী হাসিনার পতনে তার মিত্র ভারত দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এজন্য তারা সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি করে তাদের দোসরদের মাধ্যমে বিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকল দল ও মতের লোকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের চক্রান্ত ও অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের সুন্দর ও স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে ভারত ও দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা এখনো বিরামহীন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ভারতকে বুঝতে হবে, এ দেশে আর তাঁবেদারি রাজনীতি ফিরে আসবে না।’

ডা: তাহের বলেন, ‘আমরা আগামীতে এমন একটি জাতীয় সরকার চাই, যে সরকার দেশ থেকে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, লুটপাট ও সকল অন্যায় দূর করে মানুষের মৌলিক অধিকার ও চাহিদাগুলো পূরণে সক্ষম হবে। এ জন্য দেশের নেতৃত্ব থেকে অসৎ লোকদের সরিয়ে সৎ, যোগ্য ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের আগামীর রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কার বিহীন নির্বাচন যেমন অর্থবহ হবে না, তেমনি নির্বাচন না হলে দেশের পরিবেশও স্থিতিশীল হবে না। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবুল হাসনাত মো: আবদুল হালিম বলেন, ‘পতিত স্বৈরচারী আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অসংখ্য আলেম-ওলামা ও ছাত্র-জনতাসহ হাজার হাজার লোককে হত্যা করেছে। তাদের জুলুম নির্যাতনে সাধারণ মানুষ নিজেদের বাড়ি ঘরে থাকতে পারেনি। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে দু’হাজার দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে মানুষ এখন স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে পারছে।’

মাহফিলে প্রধান আলোচক হিসেবে তাফসীর পেশ করেন প্রখ্যাত মুফাসসির ও বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার মুফতি আমির হামজা। বিশেষ আলোচক হিসেবে তাফসীর পেশ করেন সাভার বাসস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইয়াহিয়া তাকী।

সাবেক ছাত্র নেতা মো: মনির হোছাইন মজুমদারের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আবদুল বাতেনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আমির মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, পৌর আমির মাওলানা মো: ইব্রাহীম, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল হাকিম, সেক্রেটারি আবু তাহের, শিবিরের সাবেক উপজেলা সভাপতি রবিউল হোসেন মিলন প্রমুখ।