চুরি করা হাঁস রান্না নাকি প্রেম
- নুরুন্নবী ভুইয়া, আখাউড়া
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:২২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় রহস্য তৈরি হয়েছে। তদন্তে সামনে এসেছে দু’টি বিষয়। একটি চুরি করা হাঁস রান্না করা, অরেকটি প্রেমঘটিত কারণ।
বুধবার দুপুরে আসামি ফারহান রনিকে (২৭) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার শারমিন ওরফে হরলুজা বেগমের বড় মেয়ে রুমা আক্তার তার বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে আসামি রনি হরলুজা বেগমকে ডেকে নিয়ে ছুরি দিয়ে গলা কেটে লাশ আগুনে পুড়ে হত্যা করে। তবে আসামির অসংলগ্ন কথায় হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদ্ঘাটন হয়নি।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় প্রতিদিনের মতো হরলুজা বেগমের স্বামী নুরুল ইসলাম কূলা বিক্রির জন্য ঘর থেকে বের হয়ে যান। তার স্বামী বের হওয়ার ২০ মিনিট পর রনি তার বাবার অসুস্থতার কথা বলে হরলুজাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে উপজেলার রহিমপুর গ্রামে তাদের বাড়ির পরিত্যক্ত একটি ভাঙ্গা টিনের ঘরে এনে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পরে বিচ্ছিন্ন মাথাটি ৩০০ গজ দূরে একটি জমিতে পুতে ফেলে। মাথাবিহীন বাকি অংশ কম্বল দিয়ে পেঁচিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে এলাকাবাসী এই ভাঙা ঘরের ভেতরে আগুন জ্বলছে দেখে পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হরলুজার হাত-পা পোড়া মাথাবিহীন দেহ আগুনে পুড়ছে দেখতে পান। ততক্ষণে তার দেহ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ রনিকে স্থানীয় গাজীর বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যার আসল কাহিনী বেরিয়ে আসে। এ সময় দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা-সহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়। পরে হরলুজার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর মর্গে পাঠায়।
পুলিশ আরো জানায়, হত্যাকাণ্ডের কারণ নিয়ে রনি অসংলগ্ন কথা বলছে। একবার বলছে তার কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে হরলুজা তাবিজ করেছে। আবার বলছে, তার এক মেয়েকে তিনি বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। তিনি সঠিক তথ্য দেননি।
এদিকে অজ্ঞাত কারণ দেখিয়ে হরলুজার বড় মেয়ে ফারহানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করলেও তিনি ধারণা করছেন চুরি করা হাঁস রান্নার জন্য তার মাকে রনি ডেকে নিয়ে যায়, তার মা হয়তো এতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রনি এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, রনি আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো: শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার ছেলে। রহিমপুর গ্রামে তার বাড়ি। রনির দাদার সময় থেকে হরলুজা তাদের জমিতে ঘর তুলে স্বামী ও মেয়েদের নিয়ে বসবাস করতেন। রনিকে কোলে পিঠে করে হরলুজা মানুষ করেছেন। এ অবস্থায় তাকে হত্যার বিষয়টি স্থানীয়রা কেউ মেনে নিতে পারছেন না। সবাই তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘাতক ফারহান একেক সময় একেক কথা বলছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা