কক্সবাজারে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসীর নামে ভাড়াটে লোকজন এনে সড়ক অবরোধ!
- আতিকুর রহমান মানিক, ঈদগাঁও
- ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:১২
দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনকে ঘিরে আরোপিত সরকারী বিধি-নিষেধকে চ্যালেঞ্জ করে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন এক শ্রেণির পর্যটন ও হোটেল ব্যবসায়ী। এসব ব্যবসায়ীদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের দাবিতে ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপবাসীর’ ব্যানারে ভাড়াটে লোকজন এনে ও কাফনের কাপড় গায়ে জড়িয়ে কক্সবাজারের কলাতলি ডলফিন মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচির নামে অরাজকতা ও যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তারা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১১টা থেকে কক্সবাজার কলাতলী ডলফিন মোড়ে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা লোকজনের সিংহভাগই রোহিঙ্গা ও ভাড়া করে আনা স্থানীয় লোকজন বলে জানা গেছে। এর আগে সকাল ৯টায় একই লোকজন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের নামে ফটোসেশান করেন ।
সকাল ১০টার দিকে হোটেল মোটেল জোনের কলতলীতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট-সংলগ্ন সড়কে শতাধিক নারী পুরুষ অবস্থান নিয়েছেন। শেখ রেহানার ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক এক জাহাজ ব্যবসায়ীর স্থানীয় এজেন্ট হোসাইন ইসলাম বাহাদুর তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদের মধ্যে আবদুল হক, সুফিয়া খাতুন ও নূরুল আলমসহ আরো অনেকে জানান টাকার বিনিময়ে তারা শহরের সমিতিপাড়া ও নুনিয়াছড়া থেকে এসেছেন।
এরপরই তারা শহরের প্রবেশদ্বার ডলফিন মোড়ে এসে কাফনের কাপড় গায়ে জড়িয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন।
এ সময় মাইক হাতে নিয়ে বক্তব্য দেন বিভিন্ন হোটেল ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
তারা দাবি করেন, সরকারের এই বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসীর জন্য হুমকি স্বরূপ। তারা অভাব অনটনে দিনাতিপাত করছে সরকারের এই সিদ্ধান্তে। এই সিদ্ধান্ত অচিরেই বাতিল করা না গেলে পুরো দ্বীপবাসীর জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে দাড়াবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন হোটেল মালিক ও পর্যটন ব্যবসায়ী নেতারা।
সকাল থেকে শুরু হওয়া দীর্ঘ এই অনশন কর্মসূচি পালনকালে সংলগ্ন এলাকাসমূহ শহর যানযটে স্থবির হয়ে পড়ে।
আন্দোলনকারীরা রাস্তা অবরোধ করে অরাজকতা সৃষ্টি করলে দুপুরের পরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ট্রাফিক ) জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফার ইয়াছমিন চৌধুরী, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম ও শহর জামায়াত আমির আব্দুল্লাহ ফারুক।
তারা সরকারের উচ্চপর্যায়কে বিষয়টি অবহিত করবেন জানিয়ে অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ করলেও তা প্রত্যাখ্যান করে অরাজকতাকারীরা। একে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মনে করেছেন অনেকে ।
এদিকে সেন্ট মার্টিনবাসীর নামে রোহিঙ্গা ও ভাড়াটিয়া লোকজন জড়ো করে অরাজকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেছে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম। পরিবেশবাদী সংগঠক কলিম উল্লাহ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, ‘নুনিয়াছটা ও সমিতি পাড়া থেকে লোকজন নিয়ে সেন্টমার্টিন এর লোক বলে আন্দোলন করছে। সাংবাদিক ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কয়েকজনের সাক্ষাৎ নেয়া হোক।
সত্যি ঘটনা!’
জাহাঙ্গীর আলম শামস লিখেছেন, কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন নিয়ে সেন্টমার্টিনের লোক পরিচয়ে আন্দোলনের অভিযোগ উঠেছে ।
অভিযুক্ত হোসাইন ইসলাম বাহাদুর ফোন রিসিভ না করায় উপরোক্ত সব ব্যাপারে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি ।