২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ফেনীতে ‘গণহত্যায় সহযোগী’ ডিসির অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ফেনীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ - ছবি : নয়া দিগন্ত

ফেনী শহরের মহিপলে ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নির্বিচারে গুলিবর্ষণে নয়জন নিহতের ঘটনায় ‘গণহত্যার সহযোগী’ আখ্যা দিয়ে জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চার দফা দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দোয়েল চত্বরে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

এ সময় শিক্ষার্থী নাঈম ফরায়জীর পরিচালনায় বিপ্লবী ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহান ও আবদুল্লাহ উবায়ের অন্তু, সোনাগাজী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রেদোয়ানুল ইসলাম, ফেনী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম রাতুল।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আশা ছিল উন্নতি আর শান্তি, করেছেন অনিয়ম আর দুর্নীতি’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘আওয়ামী লীগের দোসর শাহীনা আক্তারের বিচার চাই’, এমন শ্লোগানে দেয়। পরে শহীদ মিনার চত্বর থেকে মিছিল শুরু করে পুরাতন জেল রোড ঘুরে করে ট্রাংক রোডের দোয়েল চত্বর এসে শেষ হয়।

আবদুল্লাহ উবায়ের অন্তু বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমাদের ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। স্বৈরাচার গেলেও তার দালালরা এখনো টিকে আছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চিন্তা করছেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। যারা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হত্যাকারীদের সাফাই গাইছেন তাদের সাবধান করছি। স্বাধীন দেশে দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি চলবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা লেজুড়বৃত্তি প্রশাসন চাই না। সুশৃঙ্খল বাংলাদেশ চাই। যে বাংলাদেশে আর কোনো মা-বোন নির্যাতনের শিকার হবে না।’

রফিকুল ইসলাম রাতুল বলেন, ‘ফেনীর ইতিহাসে ৪ আগস্ট মহিপালে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। ওই দিন পাখির মতো আমার ভাইদের গুলি করে মারা হয়েছে। জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তারের তত্ত্বাবধানে দু’জন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। তারা ছাত্র-জনতাকে কোনো সহায়তা করেনি। ১৭ জুলাই শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীবাহিনী ছাত্র-ছাত্রীদের নির্যাতন, ১৮ জুলাই বড় মসজিদের সামনে পুলিশ গুলি করার সময় জেলা প্রশাসক নীরব ভূমিকায় ছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পুনরায় স্বাধীন হয়।’

রাতুল আরো বলেন, ‘ফেনীতে যারা গুলি করেছে তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। জেলা প্রশাসকের ভূমিকার কারণে যৌথবাহিনী কাজ করতে পারেনি। দু’মাস পার হলেও ডিসি শাহীনা কোনো শহীদ পরিবারের সাথে দেখা করেনি। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ফেনীর দু’সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন নাসিম ও নিজাম হাজারীকে কদমবুচি করতেন। তাদের সাথে যোগসাজশে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে জেলা প্রশাসকের অপসারণ ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।

শিক্ষার্থীদের দাবি হলো ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তারের পদত্যাগ ও অপসারণ, আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের থেকে শুরু করে যারা অন্যায়, অত্যাচার ও দুর্নীতির সাথে জড়িত এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে দালালি করেছে তাদেরকে দ্রুত অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগকে যারা পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং যারা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হত্যাকারীদের রক্ষা করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement