০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন

- ছবি : নয়া দিগন্ত

খাগড়াছড়িতে বাঙালি শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার ঠেকাতে জারি করা ১৪৪ ধারা আজ বুধবার বিকেল ৩টার পর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে, সকাল পর্যন্ত জনমনে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে দোকানপাট খুলতে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন।

গতকাল মঙ্গলবার এক বাঙালি শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়কের কেএসটিসি হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৩০ দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা।

জেলা শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়ক, নয়নপুর, আনন্দ নগর রাস্তার মাথা ও মহাজন পাড়া সড়কের ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায় আগুনে পুড়িয়ে দেয়া মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র।

নয়নপুর এলাকার চা দোকানী মো: সুমন বলেন, ‘আমি নতুন দোকান দিয়েছিলাম এখনো দোকানের সাইনবোর্ড লাগাতে পারিনি। সংঘর্ষ দেখে দোকান বন্ধ করে চলে গিয়েছিলাম। আমার দোকানের তালা ভেঙে দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। দোকানে আনুমানিক ৭ লাখ টাকার মালামাল ছিল। সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। উপার্জনের একমাত্র উপায় হারিয়ে আমার এখন পরিবার নিয়ে চলার মতো অবস্থা নাই।‘

পানখাইয়া পাড়া সড়কের উসেংখিং বিউটি পার্লরের মালিক উসেংখিং বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে বিকেল ৩টায় দোকান বন্ধ করে চলে যাই। সকালে এসে দেখি দেকানে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। দোকান পুরোপুরি খালি পড়ে রয়েছে। কে বা কারা এসব করেছে আমি দেখিনি।‘

কেএসটিসি হাসপাতালের ম্যানেজার মো: পারভেজ ইসলাম বলেন, ‘দুপুর থেকে হাসপাতাল বন্ধ থাকার পরও হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে।‘

এদিকে, বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।

জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান জানান, ‘খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সহিংসতা যাতে না বাড়ে সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।‘

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘সরকারি কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় দু‘টি মামলা হয়েছে। শিক্ষক হত্যার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা হয়নি।‘

খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ‘পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। বাজারের কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশের টহল রয়েছে।‘

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে এনে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে স্কুলের অধ্যক্ষের রুমে পিটিয়ে হত্যা করে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় জেলা সদরের পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মাঝে সহিংসতা শুরু হয়। সহিংসতা রোধে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।


আরো সংবাদ



premium cement