সবগুলো সূচক পতনেও পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
বিদায়ী সপ্তাহে (১৫ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল) লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। সেই সাথে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সব ক’টি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। এর পরও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকার উপরে বেড়েছে।
ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে দুই মাসের বেশি সময় ধরে পতনের মধ্যে আছে পুঁজিবাজার। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন এক লাখ কোটি টাকার উপরে কমে যায়। তবে ঈদের আগে শেষ চার কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার। গেলো সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। আর সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬ হাজার ৩২৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ২১ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ১ হাজার ৯১২ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ২৬১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
গেল সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ ১৭৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট কমেছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬৮৬ পয়েন্টে। প্রধান সূচকের সাথে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অপর দুই সূচকও কমেছে। শরিয়াহ সূচক ‘ডিএসইএস’ ৩৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানিগুলোর সূচক ‘ডিএস ৩০’ এক সপ্তাহে ৪৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমেছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৯৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২১ কোম্পানির শেয়ার দরই ছিল অপরিবর্তিত। দর কমেছে ২৮৫টির, বিপরীতে ৮৯ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন বেশি হয়েছে যেসব কোম্পানি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, তৌফিকা ফুডস, বেস্ট হোল্ডিংস, ফু-ওয়াং ফুড, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফু-ওয়াং সিরামিকস, গোল্ডেন সন, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, শাইনপুকুর সিরামিকস এবং মালেক স্পিনিং। গত সপ্তাহে মূল্যবৃদ্ধি শীর্ষে ছিল যথাক্রমে এসইএমএল মিউচুয়াল ফান্ড, প্রাইম ফিন্যান্স ১ম মিউ, ফান্ড, খুলনা পাওয়ার, দেশবন্ধু পলিমার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন জুবিলি মিউ.ফান্ড, ফু-ওয়াং ফুড, তৌফিকা ফুডস এবং শাহজি পাওয়ার। অপর দিকে মূল্য হারিয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, পাওয়ার গ্রিড, ইসলামিক ফিন্যান্স, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট ফিন্যান্স, বেক্সিমকো, পিপলস লিজিং এবং ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং।
এ দিকে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই সূচক ২.৯২ শতাংশ ও সিএসসিএক্স সূচক ২.৯০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৬ হাজার ২৪৪.৫১ পয়েন্ট ও ৯ হাজার ৭৬৬.৮২ পয়েন্টে।
এ ছাড়া সিএসআই সূচক ১.৯৯ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ২.৫২ শতাংশ ও সিএসই-৫০ সূচক ৩.৬৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৬৮.৩৮ পয়েন্টে, ১২ হাজার ৪৫৩.৭১ পয়েন্টে ও ১ হাজার ১৪৭.৩২ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহে হয়েছিল ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩০১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬১টির, কমেছে ২১১টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টি কোম্পানির শেয়ার দর।
গত সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন বেশি হয়েছে তৌফিকা ফুডস, প্রাইম ফিন্যান্স ১ম মিউ. ফান্ড, বিডি শিপিং করপোরেশন, বিবিএস ক্যাবলস, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট হোল্ডিংস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, রংপুর ডেয়ারি এবং রবি এক্সিয়াটা। সপ্তাহজুড়েই মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল যথাক্রমে প্রাইম ফিন্যান্স ১ম মিউ. ফান্ড, রংপুর ডেয়ারি, ফু-ওয়াং ফুড, কে অ্যান্ড কিউ, বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, তৌফিকা ফুডস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, দেশবন্ধু পলিমার এবং মিথুন নিটিং।
গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকিং খাতের ৬টি ব্যাংক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে যেগুলো- প্রাইম ব্যাংক- ১৭.৫ ক্যাশ, উত্তরা ব্যাংক- ১৭.৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ১২.৫ শতাংশ বোনাস, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১০ শতাংশ ক্যাশ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ১৭.৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ১৭.৫ শতাংশ বোনাস, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১০ শতাংশ ক্যাশ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১৪ শতাংশ ক্যাশ, চলতি সপ্তাহে আসছে আরো ১৪ কোম্পানির ডিভিডেন্ড কোম্পানিগুলো হলো- এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, আল আরাফাহ ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, মেঘনা ইনস্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইনস্যুরেন্স, নিটল ইনস্যুরেন্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স ও বাটা সু কোম্পানি।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক্সিম ব্যাংকের বোর্ড সভা ২২ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টায়, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২২ এপ্রিল বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে, ইসলামী ব্যাংকের ২২ এপ্রিল বিকেল ৩টায়, ওয়ান ব্যাংকের ২২ এপ্রিল বিকেল ৩টায়, ব্যাংক এশিয়ার ২৫ এপ্রিল বিকেল ৩টায়, আল আরাফাহ ব্যাংকের ২৫ এপ্রিল বেলা ২টা ৩৫ মিনিটে, সাউথইস্ট ব্যাংকের ২৫ এপ্রিল বিকেল ৪টায়, ইউনিয়ন ব্যাংকের ২৫ এপ্রিল বিকেল ৪টায়, গ্লোবাল ব্যাংকের ২৫ এপ্রিল বিকেল ৩টায়, মেঘনা ইনস্যুরেন্সের ২২ এপ্রিল বিকেল ৩টায়, ইউনাইটেড ইনস্যুন্সের ২২ এপ্রিল বিকেল ৩টায়, নিটল ইনস্যুরেন্সের ২৪ এপ্রিল বিকেল ৩টায়, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্সের ২২ এপ্রিল বিকেল ৪টায় এবং বাটা সু কোম্পানির ২২ এপ্রিল বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।
৯ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের প্রেরণ: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৯ প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীরা ৩১ জুন, ২০২৩ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেয়েছে।
স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, বিএফটিএন সিস্টেমের মাধ্যমে ঘোষিত ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রেরণ করা হয়েছে।