ভ্যাট বাড়ানো হলে রেস্তোরাঁ বন্ধের হুমকি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
হোটেল, রেস্তোরাঁয় ভ্যাটের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এমন সিদ্ধান্তে এখাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। একই সাথে এ খাতের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি উপেক্ষা করে যদি ভ্যাট বাড়ানো হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেস্তোরাঁ বন্ধের হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানায় সংগঠনটি। এ সময় বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, দুই বছরের বেশি সময় ধরে যেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকার করের আওতা না বাড়িয়ে কর বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ তিনগুণ ভ্যাট বাড়িয়ে দেয়া হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এর প্রভাব সরাসরি পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।
তিনি বলেন ৭০ শতাংশ রেস্তোরাঁ এখনো ভ্যাটের আওতার বাইরে রয়েছে। প্রশাসনের ব্যয় কমিয়ে ও অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দিয়ে সরকার ঘাটতি মেটাতে পারে বলে তিনি মনে করেন। আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো দেশের জনগণের ওপর ইচ্ছে মতো করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া কোনো পূর্ণাঙ্গ সমাধান নয় বলে তিনি জানান।
এ সময় সংগঠনটির মহাসচিব বলেন বিশ্বের সব দেশেই রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাত প্রত্যক্ষ কর। যে যত বড় ধনী, তাকে তত বেশি আয়কর দিতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে করের আওতা না বাড়িয়ে ভ্যাটকে রাজস্ব আয়ের প্রধান হাতিয়ার করা হয়েছে। বর্তমানে ভ্যাট নিবন্ধন নেয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৫ হাজার। এর মধ্যে গড়ে সাড়ে তিন লাখ প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভ্যাট দিয়ে থাকে। এর বাইরে যে লক্ষাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ খাতটি বিক্রয়ের ওপর ভ্যাট ও আয়ের ওপর কর প্রদান করে সুতরাং ভ্যাটের সাথে ট্যাক্সেশনও জড়িত। রাষ্ট্র ৫৩ বছরে ব্যবসায়ীদের জন্য কাজ করেনি। তবে সরকার হাতেগোনা কিছু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করেছে। তারাই ফুলে ফেঁপে বড় হয়েছে।
হোটেল, রেস্তোরাঁয় ভ্যাটের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বর্তমানে সাধারণ মানের এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) রেস্তোরাঁয় খাওয়ার জন্য ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এটি বেড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ হতে পারে। এছাড়া, নন-এসি হোটেলের ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক এনবিআর জানিয়েছে, যেসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করা হচ্ছে তার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই বিধায় সর্বসাধারণের ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে না। এবং মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়বে না। জনস্বার্থে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শুল্ক কর হারে ব্যাপক ছাড় দেয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং জাতি হিসেবে স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি ও হার যৌক্তিকীকরণের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা