জনবান্ধব সিভিল সার্ভিস গঠনের দাবি আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬
বৈষম্যহীন, জনবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক সিভিল সার্ভিস গঠনের সুপারিশ করেছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। একইসাথে দক্ষ সিভিল সার্ভিস গড়ে তোলার লক্ষ্যে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও উচ্চতর শিক্ষাবৃত্তির ক্ষেত্রে সমতা আনয়ন, গাড়ি ঋণ সুবিধার বৈষম্য দূর করার দাবি জানানো হয়।
শনিবার ঢাকায় পূর্ত ভবন অডিটোরিয়ামে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কার : পরিপ্রেক্ষিত সিভিল সার্ভিস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বৈঠকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রববানী, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট এম এ আজিজ, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর মো: আবদুস সামাদ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ আহমেদ ইকবাল চৌধুরী ও সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সালেকুর রহমান মাসুম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান (জীবল) ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংহতির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মির্জা নাজমুল হুদা।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার গড়ে ওঠার পেছনে প্রশাসন ক্যাডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর যে গুলি চালানো হয়েছিল, তার নির্দেশদাতা ছিল প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। কারণ মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলির নির্দেশ দিতে পারে শুধু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। তাদের নির্দেশেই যে গুলি চালানো হয়েছে তা বিভিন্ন ভিডিও থেকেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
বক্তারা বলেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। অথচ সংবিধানের এ বিধান লঙ্ঘন করে প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটা পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে অন্যান্য ক্যাডার সদস্যদের সাংবিধানিক অধিকার অনৈতিকভাবে হরণ করে চলেছে। মেধাবী সিভিল সার্ভিস গড়ে তুলতে সব ক্যাডারের উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উপসচিব হিসেবে নিয়োগের বিধান করতে হবে।
তারা আরো বলেন, যারা একটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাদের দমিয়ে রেখে প্রশাসন ক্যাডার মন্ত্রণালয়ের পোস্টগুলো দখল করে রেখেছে। এতে অন্যান্য ক্যাডারের সদস্যরা কাজের অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলছে। ফলে রাষ্ট্র ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই প্রত্যেক ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদে নিজ নিজ ক্যাডারের সদস্যদের নিয়োগ দিতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ করতে হবে।
উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হচ্ছে- উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া, কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন অর্থাৎ ‘ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার’ এর বাস্তবায়ন, প্রশাসন ক্যাডারের ও অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনয়ন, পদ আপগ্রেডেশন, পদোন্নতিতে সমান সুযোগ দেয়া, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের সংশোধন ও পুনর্বিন্যাস, বিভিন্ন ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার ইত্যাদি।
এ ছাড়া দক্ষ সিভিল সার্ভিস গড়ে তোলার লক্ষ্যে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও উচ্চতর শিক্ষাবৃত্তির ক্ষেত্রে সমতা আনয়ন, গাড়ি ঋণ সুবিধার বৈষম্য দূরীকরণসহ অন্যান্য দাবি তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য ড. মোহাম্মদ মফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা