১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

মির্জাগঞ্জে আমন ক্ষেতে আলোক ফাঁদ ব্যবহার

- ছবি : নয়া দিগন্ত

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আমন ক্ষেতে পাতা মোড়ানো ও মাজরা পোকার আক্রমণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। কোনো কোনো স্থানে কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না। উপজেলায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হেক্টর জমিতে পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে।

তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ কত হেক্টর জমির পোকা নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে তা সঠিক তথ্য নিরুপন করতে পারেনি।

উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারে আমন মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ও ১ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে উফসী জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। ফসল রক্ষায় এ বছর আমন ক্ষেতে বসানো হচ্ছে ৩০টি আলোর ফাঁদ এবং আরো আলোর ফাঁদের কাজ চলমান আছে। আর আলোর ফাঁদের পাশাপাশি ক্ষেতে পাচিং পদ্ধিতিতে (ডাল পোতা) ব্যবহার করছেন কৃষকরা। এ সকল ব্যবহারে পোকা দমন করার কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

কৃষকরা জানায়, মৌসুমের শুরুতে টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে যায় জমির বীজতলা। এতে সঙ্কট দেখা দেয় আমনের চাড়ার। বিভিন্ন স্থান থেকে বেশি দাম দিয়ে আমনের চারা কিনে রোপন করতে হয়েছে। এরপর আবার মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকা নিয়ে নতুন বিপদ! একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত আমন চাষিরা। আমন ক্ষেতে কয়েকবার স্প্রে করেও পোকা দমন হচ্ছে না।

কৃষক হাফিজ উদ্দিন জানান, ‘উন্নতমানের কীটনাশক বারবার ব্যবহারের ফলে ক্ষেতের চারা উন্নতি হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: নাহিদ হাসান বলেন, ‘অতিবৃষ্টিতে ডুবে বীজতলা ও ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যদিও এ সময়ে ধানগাছে মাজরা পোকার আবির্ভাব ঘটে। কৃষি বিভাগ থেকে পোকা দমনে কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পোকা চিহ্নিত করতে ও দমনে চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের আমন ধানক্ষেতে কৃষি বিভাগ থেকে ‘আলোর ফাঁদ’ স্থাপন করা হয়েছে। আলোর ফাঁদ বসিয়ে ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি জরিপ করা হচ্ছে। যেসব এলাকায় পোকা বেশি দেখা যায় সেসব যায়গায় আলোক ফাঁদ বেশি বসানো হয়। জমিতে রাতের বেলায় একটি স্থানে বালতির ওপর অংশে বৈদ্যুতিক ভাল্বের আলো জ্বালিয়ে দিলে ক্ষেতের ভেতরে থাকা ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন ধরনের পোকা-মাকড় উড়ে এসে জড়ো হয়ে বালতির পানিতে পড়ছে। পরে এসব পোকা-মাকড় পানিতে আটকে গেলে আর উঠতে পারে না। পরে পানিতে আটকা পড়া ক্ষতিকর পোকা মাকড়গুলোকে কৃষকরা মেরে ফেলেন। এভাবে আমন ধান ক্ষেত পোকা-মাকড়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করা হচ্ছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা কোন ধরনের খরচ ছাড়াই সহজে ফসলের ক্ষতি ঠেকাতে পারে।’

পোকা আক্রমন ব্যপারে তিনি আরো বলেন, ‘ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে পোকা আক্রমন বেড়েছে। তাই ফসল রক্ষায় পোকা দমনে কাজ করতে হবে। পোকার আক্রমনের পর থেকেই ক্ষেতে ডাল পুঁতে দিতে হবে যাতে পাখি বসে ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলতে পারে এবং আলোর ফাঁদ স্থাপন ও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।’


আরো সংবাদ



premium cement

সকল