২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

জালে যখন ইলিশ, জেলেরা তখন নিষেধাজ্ঞায় হতাশ

ইলিশ - নয়া দিগন্ত

ইলিশ বাঙালির গর্ব। হুমায়ূন আহমেদ মনে করতেন, বাংলা বর্ণমালার শিশুশিক্ষার বইয়ে ‘আ’-তে যদি আম হয়, তা হলে ‘ই’-তে ইলিশ। আরেক বিখ্যাত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তো লিখেছেনই, ইলিশের স্বাদ দেড় কিলো থেকে পৌনে দু’কিলোয়। তিনি বিশ্বাস করতেন, দুধের স্বাদ যেমন ঘোলে মেটে না, তেমনই খাঁটি ইলিশের স্বাদের সাথে অন্য কোনো কিছুর সমঝোতা চলে না।

প্রজননের জন্য আশ্বিনের পূর্ণিমায় সাগরের নোনা পানি থেকে নদীর মিঠা পানিতে এসে ডিম ছাড়ে মা ইলিশ। এ সময়ের নিরাপদ প্রজননের জন্য আজ রোববার (১৩ অক্টোবর) থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত নদ-নদী ও সাগরে সব ধরনের মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। তাই একে একে জেলে ট্রলারগুলো ঘাটে ফিরে আসছে।

জেলেরা বলছে, মৌসুমজুড়ে বৈরী আবহাওয়ার কারণে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়েনি তাদের জালে। পুরো মৌসুম হতাশায় কাটলেও শেষের এক সপ্তাহে মিলেছে ইলিশ। জালে যখন ঝাকে ঝাকে ধরা পড়ছে ইলিশ, ঠিক তখনি নিষেধাজ্ঞায় হতাশ জেলেরা।

তারা জানায়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ইলিশ মৌসুম হলেও এ বছর হতাশ তারা। একদিকে বৈরী আবহাওয়া, অন্যদিকে প্রাকৃতিক কারণে জালে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়েনি। তবে অক্টোবরে এসে এক সপ্তাহে যখন মাছ ধরা পড়ছিল, ঠিক তখনই নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

জেলেদের অভিযোগ, ভারতের জেলেরা বাংলাদেশী পানিসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ ধরে। নিষেধাজ্ঞাকালীন বাংলাদেশী জেলেরা নিষেধাজ্ঞা মেনে চললেও তারা বিগত নিষেধাজ্ঞায় মাছ ধরেছে।

এবার যেন সেই সুযোগ না পায়, এই অনুপ্রবেশ ঠেকানোর দাবি জেলেদের।

মৎস্য বিভাগ বলছে, নিষেধাজ্ঞাকালীন উপকূলীয় রাঙ্গাবালী উপজেলার ১১ হাজার ৬৬৬ জন জেলেকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক সাগরে দুই নীতি বন্ধ করতে হলে ভারত ও বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা এক হওয়া জরুরি। তা না হলে বাংলাদেশ ও ভারত নিষেধাজ্ঞার সময় হেরফের হওয়ার সুযোগ নিতে চাইবে ভারতীয় জেলেরা।

রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১৬ হাজার ৮০৯ জন নিবন্ধিত জেলে। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ১৬৩ জন নিবন্ধিত জেলেসহ অনিবন্ধিত অসংখ্য জেলে নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্য সহয়তা থেকে বঞ্চিত হবেন।


আরো সংবাদ



premium cement