০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১,
`

পাথরঘাটায় আ’লীগের সাবেক এমপি রিমনসহ ৪০৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পাথরঘাটায় আ’লীগের সাবেক এমপি রিমনসহ ৪০৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা - ছবি : নয়া দিগন্ত

বরগুনার পাথরঘাটায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রিমনসহ ৪০৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শান্তনু কুমার মন্ডলের আদালতে মামলা করেন নুরুল ইসলাম মনির বড় ভাইয়ের ছেলে সোলায়মান হাওলাদার।

জানা যায়, বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পাথরঘাটা-বামনা-বেতাগীর সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মনি বাবা-মায়ের কবর জেয়ারত করতে নিজ এলাকা পাথরঘাটায় প্রবেশের সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হাতে হামলার শিকার হয়ে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টম্বর আহত হন। এতে সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মনিসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় প্রায় ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ও অর্ধ শতাধিক মটরসাইকেল নিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার দু’বছর পর এ মামলা হয়।

এতে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ও বর্তমান ও সাবেক ৯ ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০৫ জনে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ মো: মুবিন।

এর আগে একই ঘটনার জেরে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯৯ জনকে আসামি করে মামলা মিথ্যা মামলা করেছিলেন কাকচিড়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দীন পল্টু। এতে আরো অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছিল।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফরাত আহসান ইপু জানান, বাদি সোলায়মানের আপন চাচা নুরুল ইসলাম মনি বরগুনা-২ আসনের তিন বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি ঢাকায় অবস্থান করে ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা ও রাজনৈতিক করেন। সে সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময় পাথরঘাটাসহ বরগুনার সকল মানুষের জনপ্রিয় প্রতিনিধি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন পূর্ব থেকেই খুন করে দুনিয়া থেকে শেষ করার পরিকল্পনা করছিল। ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেল ৪টার দিকে বাদির চাচা তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করার জন্য ঢাকা থেকে বাড়িতে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় বাদিসহ কয়েক শত মানুষ তাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য পাথরঘাটা-মঠবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কের সিএন্ডবি এলাকায় এলে তৎকালীন এমপি ও আ’লীগের নেতারা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বাদির চাচা নুরুল ইসলাম মনিসহ শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মীরা আহত হন।

ঘটনার সময় গুরুত্বর আহত পাথরঘাটা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন কাজী জানান, রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে আওয়ামী লীগ এলাকায় সমাজ বিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী, নারী-নির্যাতন ও অবৈধভাবে ভূমি দখল করে নিরীহ মানুষকে নিঃস্ব করেছে। উপজেলাব্যাপী তারা সব সময় ত্রাস সৃষ্টি করে রাখত। আমার ওপর অন্তত পাঁচবার হামলা করে রক্তাক্ত করেছে। আমাকে মারধরের কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার পাত বসাতে হয়েছে। তারাই আমাদের ওপর হামলা করে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছে।

পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো: মুবিন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ১০৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দুই থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মামলার এফআইআর গ্রহণের জন্য পাথরঘাটা থানার ওসিকে আদালত থেকে নির্দেশ দিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement