‘২ লাখ টাকা না পাঠালে ওরে কিন্তু মেরে ফেলব’
- এ এস এম জসিম, পাথরঘাটা (বরগুনা)
- ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:২৭
আমি রাতে ঘুমে ছিলাম, ভোররাতে আমার মোবাইল ফোনে অপরিচত একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে তোফাজ্জলের সাথে কথা বলতে বলে।
তখন তোফাজ্জল বলে, ভাবি আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছি, আমাকে চোর সন্দেহ করে ধরছে। ওরা টাকা চায় না হলে আমাকে মারবে। এর পরে ওখানের ছেলেরা ফোন নিয়ে বলে তোফাজ্জল মোইল চুরি করতে এসে ধরা পরেছে। দুই লাখ টাকা না পাঠালে ওরে কিন্তু মেরে ফেলব! আপনি সঠিক কথা বলেন আপিন কে হন, তখন আমি বলেছি আমি ওর ভাবি। আবার বলে, আপনার নাম কি তখন আমার নাম বলেছি। এর পরে বলে আপনার নম্বর কিন্তু ট্রাক করা হচ্ছে, আপনি কে বলছেন সঠিক করে বলেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তোফাজ্জলের ভাবি শরীফা আক্তারের সাথে আলাপ কালে তিনি নয়া দিগন্তকে এ কথা বলেন।
তোফাজ্জল হোসেন পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানী গ্রামের মরহুম আব্দুর রহমানের ছেলে এবং কাঠালতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
সে বরিশাল বি এম কলেজ থেকে বাংলা বিষয় অনার্স মাস্টার্স শেষ করে বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজে অধ্যায়নরত ছিলেন। এ অবস্থায়ই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।
শরীফা আক্তার বলেন, তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্য হওয়ায় বেশ কয়েকবছর ধরেই ভবঘুরের মতো বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াত। আমার শ্বশুর আব্দুর রহমান মারা যান, এর দুই বছর পরে মা। গত ২০২৩ সালের শেষের দিকে ক্যান্সারে আক্রন্ত হয়ে ওর বড় ভাই আমার স্বামী নাসির মারা যায়। এই ধাক্কা সইতে না পেরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেন তোফাজ্জল। আমাদের বংশে আমার দুটি ছেলে ছাড়া আর কিছুই রইল না। আমাদের দেখাশোনারও কেউ নেই। যারা এ কাজ করেছে তারা জেন আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি ভোগ করে।
কাঠালতলী ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি মো: আরিফ হোসেন জানান, তোফাজ্জল রাজনীতির সাথে জরিত ছিল কিন্তু সে কারো সাথে সে রকম ব্যাবহার করত না। ছাত্র জীবনেও সে খুব মেধাবী ছিল। যখন থেকে তোফাজ্জল অসুস্থ তখন আমাদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিত। তার মা-বাবা না থাকার কারণে তার আজ এই অবস্থা হয়েছে। সেভাবে তাকে মেরেছে তা কোনো সুস্থ মানুষ করতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেই কি মেধাবী হওয়া যায়?
মো: নাইম হাওলাদার জানান, ‘যে দেশের সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা কে ভারসাম্যহীন আর কে সুস্থ এটা বুঝতে পারে না, সে দেশে এই নাম মাত্র মেধাবীদের কাছে আমার দেশ এবং জাতী কি আশা করতে পারে?
পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আল মামুন বলেন, তোফাজ্জলের বাড়ি কাঠালতীল ইউনিয়নের তালুক চরদুয়ানী গ্রামে। সে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। তার ভাবির কাছে ফোন করে টাকা চেয়েছে সেটা আমার জানা নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা