১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত

মৃত ভেবে লাশের সাথে ফেলে রাখা হয় গুলিবিদ্ধ নবী হোসেনকে

লাশের ভেতর থেকে নবী হোসেন চিৎকার করে বলেন, ‘কে আছেন বাঁচান আমাকে। আমি মরিনি’।
-


কোটাবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন দেশমাতৃকার টানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের লক্ষ্যে বড়ভাই জামালকে সাথে নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেয় নবী হোসেন (২৩)। চূড়ান্ত বিজয়ের আগের দিন ৪ আগস্ট বিকেলে নবী হোসেন গাজীপুর বাইপাস সড়কে আন্দোলনকারীদের সাথে দুই ভাই স্লোগানে সক্রিয় ছিলেন। এমন সময় পুলিশের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। নবী হোসেনের শরীরে গুলি লাগলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা তাকে এবং তার মতো গুলি লাগা আরো অনেককে রড দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলে। গুলি লেগে এবং পরে রডের আঘাতে নবী হোসেনও অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকেন সড়কে। তখন পুলিশ তাকে মৃত ভেবে কম্বল পেঁচিয়ে রাস্তার ধারে অন্য লাশের সাথে ফেলে রাখে।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ঢাকার সিএমএইচে শয্যাশায়ী নবী হোসেন জানান, ‘যখন আমার জ্ঞান ফিরে পায়, তখন কম্বলের ভেতর থেকে অন্য লাশের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করি। ভীষণ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলাম আমি। আধাভাঙ্গা গলায় তখন ‘কে আছেন বাঁচান আমাকে। আমি মরিনি, এখানো জীবিত আমি। কেউ আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান’- বলে চিকিৎকার করি।

এ অবস্থায় আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত আটটায় খবর পেয়ে তার বড় ভাই জামাল হাসপাতালে এসে আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন।
নবী হোসেন একজন গার্মেন্টকর্মী। গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তিনি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের দেওপুর গ্রামের নসর জমার ছেলে। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম।
ধারদেনা করে নবী হোসেনের চিকিৎসা চলছে। এ পর্যন্ত চিকিৎসায় তার প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখনো সে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারেন না।

বড় ভাই জামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা দুই ভাই মিছিলে ছিলাম। পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়াশেলের কারনে রাস্তায় টিকতে না পেরে আমরা যে যার মতো দৌঁড়ে অলি গলির ভেতরে গিয়ে আশ্রয় নিই। এ সময় অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আবার অনেকে আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে কাতরাতে থাকে। পরে জানতে পারি নবী হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। তার লাশ শহীদ তাজউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে লাশ নয়, ছোটভাইকে জীবিত খুঁজে পাই।’
নবী হোসেনের বাবা নসর জমা বলেন, ‘আমার পোলা যে বাইচ্চা আছে এইডাই আল্লার কাছে শুকরিয়া। পোলার চিকিৎসা করাইতে গিয়া আমি ঋণী হইয়া পড়ছি। এহন কী করবাম বুঝতে পারতাছি না।’


আরো সংবাদ



premium cement
মহেশখালীতে প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বে যুবক খুন নাটোরে অগ্নিসংযোগের মামলায় দুলুসহ ৯৪ খালাস ক্রিড়া মন্ত্রণালয় ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়া উচিৎ : নূরুল ইসলাম বুলবুল ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন চট্টগ্রাম বিএনপি নেতা শামীমকে শোকজ, সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দিলে শাস্তি কক্সবাজারে সাবেক কাউন্সিলর টিপু হত্যা: প্রতিশোধ ও আধিপত্য বিস্তারের গল্প উন্মোচন স্ত্রীসহ শেখ হাসিনার একান্ত সচিব জাহাঙ্গীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বেনাপোলে বিজিবি ও বিএসএফের সীমান্ত সম্মেলন কিউবাকে সন্ত্রাসের মদদদাতা দেশের তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র পরকীয়া কাণ্ড : সিংগাইর থানার ২ পুলিশ ক্লোজ ঠাকুরগাঁও ও কুড়িগ্রামে আমান গ্রুপের শীতবস্ত্র বিতরণ

সকল