লালমনিরহাটে গ্রামে গ্রামে গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগ
- আসাদুল ইসলাম সবুজ লালমনিরহাট
- ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
লালমনিরহাটে গ্রামে গ্রামে গবাদি পশুর (গরু) ল্যাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে করে প্রান্তিক পর্যায়ের গৃহস্তসহ খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে।
জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলা সদরসহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার গ্রামের পর গ্রামে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদি পশু। তিন-চারটি গরু ইতোমধ্যে মারাও গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। ছাগল ও ভেড়ার পক্স ভাইরাসের সাথে এ রোগের সাদৃশ্য আছে বলে তারা জানান। এ ভাইরাস গরু ছাড়া মহিষকেও আক্রমণ করতে পারে। এক গরু থেকে আরেক গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তের সময়কাল সাধারণত বর্ষার শেষে কিংবা শরত ও বসন্তের শুরুতে। মশা-মাছির সাহায্যেও এ রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
আক্রান্ত গরু প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং খাবারের রুচি কমে যায়। জ্বরের সাথে সাথে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়, দুই পায়ের মাঝে পানি জমে যায়। পশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পি- আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষত শরীরের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত হতে পারে। শরীরের কোথাও কোথাও ফুলে যায়, যা ফেটে টুকরা মাংসের মতো বের হয়ে ক্ষত এবং পুঁজ হয়। পাকস্থলি বা মুখের ভেতরে সৃষ্ট ক্ষতের কারণে গরুর পানি পানে অনীহা তৈরি হয় এবং খাদ্য গ্রহণ কমে যায়।
মশা ও মাছি এ ভাইরাসের প্রধান বাহক হিসেবে দায়ী করা হয়। অন্যান্য কীটপতঙ্গের মাধ্যমেও ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গরুর লালা গরুর খাবারের মাধ্যমে এবং খামার পরিচর্যাকারী ব্যক্তির কাপড়ের মাধ্যমেও এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গাভির দুধেও এ ভাইরাস বিদ্যমান। তাই আক্রান্ত গাভির দুধ খেয়ে বাছুরও আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি গ্রামগঞ্জের পশুচিকিৎসকরা একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে ওই সিরিঞ্জির মাধ্যমেও রোগটি অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত গরুর দুধ উৎপাদন শূন্যের কোটায় নেমে আসে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলেন, সাধারণ চিকিৎসায় করেই গবাদি পশুর এ রোগ সারানো সম্ভব। সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। লাম্পি স্কিন রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
লালমনিরহাটের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ জেলায় ভাইরাসজনিত এ রোগটি বিস্তারের খবর পাওয়া গেছে। ল্যাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগটি আক্রান্ত গরু থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিদিনেই উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে এ রোগে আক্রান্ত গরুকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি ছোট-বড় খামারিদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা