আদমদীঘিতে দিশেহারা কৃষক ও খামারিরা
- আদমদীঘি (বগুড়া) সংবাদদাতা
- ০৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় হঠাৎ করে গরুর ক্ষুরারোগ দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে এ উপজেলায় ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৩০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত হয়েছে কৃষক ও বিভিন্ন খামারের প্রায় পাঁচশতাধিক গরু। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শে ভ্যাকসিন-ওষুধ দিয়েও এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উপজেলার কৃষক ও খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ দিকে বিষয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকেও ভাবিয়ে তুলেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে দমদমা গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই গ্রামের পূর্বপাড়ায় হাসান আলীর প্রায় ১৪ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান ষাঁড় ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এ ছাড়াও ওই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার ভুট্টু মিয়ার একটি গরু, নজরুল ওরফে নজুর দু’টি, রবিউলের দু’টি, রায়হানের একটি ও বাদলের একটিসহ মোট ২০টি গরু মারা যায়। প্রায় মাস খানেকের ব্যবধানে বিভিন্ন গ্রামে অন্তত ৩০টি গরু ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলায় মোট বাণিজ্যিক খামার রয়েছে ১০০টি। এ ছাড়া পারিবারিক খামার রয়েছে প্রায় দুই হাজার। এসব খামারে মোট ৮০ হাজার গরু রয়েছে। গত তিন, চার সপ্তাহ আগে উপজেলায় গরুর ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
দমদমা গ্রামের গরুর মালিক হাসান আলী বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তার গরুটি ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকটা সেরে গিয়েছিল। গত সোমবার গরুকে পানি খাওয়ানোর পর সেটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়। তিনি বলেন, গত কোরবানির ঈদে তার গরুটির সাড়ে চার লাখ টাকা দাম বলেছিল। ইচ্ছা ছিল সামনের কোরবানির ঈদে গরুটি বিক্রি করব, কিন্তু আমার সব শেষ হয়ে গেল।
ওই গ্রামের শ্যামল প্রামানিক জানান, গতকাল মঙ্গলবার সকালে তার ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি বকনা বাছুর ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। গরুকে ভ্যাকসিনসহ ওষুধ দিয়েও কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আমিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে এ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিনসহ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি, উঠান বৈঠক ও মেডিক্যাল ক্যাম্প করে রোগের প্রতিকার সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এ রোগটি ক্ষুরা রোগের নতুন ধরন। তাই আমরা ঊর্ধ্বতন প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিশেষজ্ঞ দলকে অবহিত করেছি। তারা এসে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব এর আসল কারণ। আশা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহে এর ফলাফল পাওয়া যাবে। এরপর করণীয় কি তা নির্ধারণ করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা