১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ধানের জাত চেনেন না কুষ্টিয়ার খাজা নগরের মিল মালিকেরা

সরকার অনুমোদিত জাতের ধান ছাড়া অন্য নামে চাল বাজারজাত করার সুযোগ নেই
-

দেশের বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজা নগরের রাইস মিল (চালকল) মালিকরা ধানের জাত ঠিকমতো চেনেন না। তাই, কুষ্টিয়ার অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে ধানের জাত ও জাতের নমুনা চেয়ে কুষ্টিয়া কৃষি বিপণন অধিদফতরে একটি চিঠি দেয়া হলে রাইস মিল মালিকরা পড়ে যান বিপাকে।
গত ৩০ জুন রোববার কুষ্টিয়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার দফতরে এ চিঠি দেয়া হয় বলে জানা গেছে। চিঠিতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি ওমর ফারুক উল্লেখ করেন, চালের বস্তার গায়ে ধানের জাত লিখতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রাইস মিল (চালকল) মালিকদের। এ জন্য সরকারের তালিকাভুক্ত ধানের জাতের নাম ও নমুনা সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
চাল ব্যবসায়ী নেতা ওমর ফারুক সাংবাদিকদের জানান, সরকার বলছে মিনিকেট বলে কোনো ধান নেই। কিন্তু আমরা এ নামে ধান কিনছি কৃষকদের কাছ থেকে। তাহলে ওই ধানের ক্ষেত্রে বস্তায় কী লিখব, সেটি জানার জন্যই এ চিঠি দেয়া হয়েছে। কুষ্টিয়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, অন্য জাতের ধান থেকে মিনিকেট নামে চাল বাজারজাত করে লাভবান হচ্ছেন মিল মালিকরা। তাই তারা এ চিঠি দিচ্ছেন। চিঠিটি ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা এলে, তা বাস্তবায়ন করা হবে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা জানান, সরকার অনুমোদিত জাতের ধান ছাড়া অন্য নামে (যেমন মিনিকেট) চাল বাজারজাত করার সুযোগ নেই। কুষ্টিয়ার খাজানগরে ৫০টির মতো অটোমেটিক রাইস মিল থেকে সরু চালের বেশির ভাগই সরবরাহ করা হয় সারা দেশে। ধানের জাত যেটাই হোক, এখান থেকে মিনিকেট নামের চালই বেশি সরবরাহ হয়ে থাকে। মিনিকেট চালের চাহিদা বেশি থাকায় বাজার চড়ে যায়। এ কারণেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে যে, চালের বস্তার গায়ে ধানের জাতের নাম ও চালের দাম লিখে দিতে হবে।
কুষ্টিয়ার বেশির ভাগ কৃষকই ধানের জাতের নাম উল্লেখ করেই বিক্রি করেন। তা ছাড়া কৃষি বিভাগও ধানের জাত উল্লেখ করেই বীজ বিতরণ ও প্রণোদনা দিয়ে থাকে। এ ছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী উৎপাদিত ধানের জাত উল্লেখ থাকে। অথচ মিলাররা এসব ধানকে সরু করে মিনিকেট চাল বানিয়ে বিক্রি করছেন। জাত উল্লেখ করে বিক্রি করলে মিলারদের মিনিকেটের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তারা এমনটা করছেন। এ ছাড়া অদৃশ্য কারণেই কুষ্টিয়ার রাইস মিল মালিকরা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দিনের পর দিন মিনিকেট নামে চাল বাজারজাত করে আসছেন।


আরো সংবাদ



premium cement