লালমনিরহাট জেলা কারাগারে টাকা দিলে সবমিলে
‘প্রভাবশালী’ কয়েদিরা বিক্রি করেন ইয়াবা গাঁজা ও ঘুমের ট্যাবলেট- আসাদুল ইসলাম সবুজ লালমনিরহাট
- ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০৫
‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’ বাংলাদেশ কারা বিভাগ এই ভিশনকে সামনে রেখে কারাগারগুলো সংশোধনাগার হিসেবে পরিচিত। সেই কারাগারে ‘প্রভাবশালী’ কয়েদিরা বিক্রি করেন ইয়াবা, গাঁজা ও ঘুমের ট্যাবলেট। তিন বেলার খাবার অত্যন্ত নিম্নমানের ও পরিমাণে কম। টাকা ছাড়া কয়েদি ও বন্দী হাজতিদের সাক্ষাৎ মেলে না। অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ করলেই নির্যাতন। ‘সচ্ছল’ বন্দীরা টাকার বিনিময়ে কারাগারের হাসপাতালে ‘রোগী সেজে’ থাকছেন। ‘এক কথায়’ টাকা দিলে সবমিলে কারাগারের ভেতরে। সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা কারাগারের ঘানি টানা কয়েকজন হাজতি মুক্তি পাওয়ার পর এসব অভিযোগ করেন। লালমনিরহাট জেলা কারাগার ৩৯০ জনের ধারণক্ষমতার বিপরীতে বর্তমানে ৪৫০ জন বন্দী রয়েছে।
মাদক সংশ্লিষ্ট কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কারাগারের ভেতরে অনেক বন্দী অবাধে মাদক সেবন করেন। কয়েকজন কারারক্ষীর ‘নিযুক্ত’ প্রভাবশালী কয়েদিরা ইয়াবা, গাঁজা ও ঘুমের ট্যাবলেট বিক্রি করেন। কারারক্ষীদের যোগসাজশে আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে অনেক হাজতি স্বজনদের কাছ থেকে এসব মাদক নিয়ে আসেন। কারারক্ষীরা এসব অবৈধ টাকার বখড়া পান নিয়মিত।
আদালতে হাজিরা দিতে আসা একাধিক হাজতি বলেছেন, তিন বেলা যে খাবার দেয়া হয় তা অত্যন্ত নিম্নমানের এবং পরিমাণেও খুব কম। এ নিয়ে অভিযোগ করলে উল্টো নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়। বন্দীদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য পণ্য লুটপাট করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কয়েদি ও বন্দী হাজতিদের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে বলেন, হাজতিদের ১৫ দিন পর একবার ও কয়েদিদের মাসে একবার টাকা পয়সা ছাড়াই আত্মীয়স্বজন দেখার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না। একজন হাজতির সাথে নেট কলে সাক্ষাৎ করার জন্য কারারক্ষীকে দিতে হয় ১০০ টাকা। জানালা কল ৫০০, অফিস কল ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। আর টাকা হলে প্রতিদিনই দেখা করা যায়।
একাধিক বন্দী বলেছেন, লালমনিরহাট জেলা কারাগার হাসপাতালটিতে ১৭ শয্যা। ‘সচ্ছল’ সুস্থ বন্দীরা মাসে ৪-৫ হাজার টাকার বিনিময়ে হাসপাতালে ‘রোগী সেজে’ থাকছেন। অথচ অনেক বয়স্ক ও প্রকৃত রোগী হাসপাতালে শয্যা পাচ্ছেন না।
একাধিক হাজতি অভিযোগ তুলেন, জেলখানায় কোনো পরির্দশক গেলে সব বিষয় ভালো বলতে হয়। কারা কর্তৃপক্ষের অনিয়মের প্রতিবাদ করলে গামছা দিয়ে হাত বেঁধে বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। আদায় করা হয় জরিমানা। রাতে ঘুমাতে দেয়া হয় দুর্গদ্ধময় পায়খানার সাথে। আর কারারক্ষীদের অনিয়ম লুকাতে কারাগারের অধিকাংশ ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বিকল করে রাখা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা কারাগারের জেল সুপার ওমর ফারুক এসব বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে মোবাইলে বলেন, আমরা কোনো অনিময় করছি না। জেলা কারাগার ৩৯০ জনের ধারণক্ষমতা হলেও বর্তমান ৪৫০ জন বন্দী রয়েছে। কারাগার হাসপাতালটি ১৭ শয্যা, কোনো শয্যা ফাঁকা নেই। প্রকৃত রোগীদেরই হাসপাতালে ঠাঁই দেয়া হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা