০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬
`

কাউখালীতে কৃষি, মৎস্য ও মুরগির খামারে ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড়ে একটি পোল্ট্রি ফার্মের মরে যাওয়া মুরগি : নয়া দিগন্ত -

ঘূর্ণিঝড় রেমালে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় মুরগির খামার, গবাদিপশু, মৎস্য ও কৃষিখাতে ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, মৎস্যজীবী, খামারি, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক উদ্যোক্তা বিভিন্ন দফতরে ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরণা দিচ্ছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি ঋণ প্রকল্প গ্রহণসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোমা রানী দাস জানান, রেমালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিখাত। ১৭ শ ২৮ হেক্টর জমির উৎপাদিত ফসল নষ্ট হয়ে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আউশের বীজতলা, আউশ ক্ষেত, চীনা বাদাম, মরিচ, মুগ ডাল, তিল, শাকসবজি, ভুট্টা, পান, কলা, পেঁপে ও ফল ফসলের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাই প্রান্তিক চাষিদের চাহিদার কিছু প্রস্তাবনা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিন গ্রামে গ্রামে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র জানায়, দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা মূল্যের গৃহপালিত হাঁস-মুরগি, গরু, ছাগলের মৃত্যু হয়েছে এবং ভেসে গেছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে পাঁচ শতাধিক মুরগি ও হাঁস খামারের প্রায় ১৫ হাজার মুরগি পানিতে ডুবে মারা গেছে। অন্যদিকে শতাধিক ছাগল ও কয়েকটি গরুও মারা গেছে। উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শিশির কুমার রায় জানান, ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা করা হচ্ছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, পাঁচটি ইউনিয়নের ২০০টি পুকুর ও ৭৫টি মাছের ঘেরের মাছ জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে। এতে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জেলে ও মৎস্যচাষিদের প্রত্যাশা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কাজ চলছে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ মিলটন জানান, তার নিজের ঘেরে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কয়েক শ’ মুরগি, গবাদি পশু, ঘেরের মাছ, কলাবাগান ও বাগানবাড়িসহ ফসলি জমি সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে গেছে।
চিড়াপাড়া ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ ও ফজলুল হকের তিন হাজার মুরগি পানিতে ডুবে মারা গেছে। ফজলুল হক বলেন, সরকার থেকে সহায়তা না পেলে তার আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না।
অতি বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় গোটা উপজেলা শহর। এতে দক্ষিণ বাজার ও উত্তর বাজারের চাউল পট্টি এলাকার অন্তত ৩৫টি আড়তের কয়েক শ’ টন বিভিন্ন প্রকারের চাল, সিমেন্ট, আটা, চিনি, ডাল ময়দাসহ অনেক ব্যবসায়ীর মুদি ও মনোহরীর মালামাল পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি ও সরেজমিনে পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া মনু ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। গত শুক্রবার পিরোজপুর দুই আসনের এমপি মহিউদ্দিন মহারাজ ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement