১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তেঁতুলিয়া নদীর তাণ্ডবে আতঙ্কিত এলাকাবাসী

স্থায়ী ব্লক নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর
-

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর তীব্র ভাঙনে আতঙ্কিত এলাকবাসী। হুমকির মুখে রয়েছে ছোটমানিকা ফাজিল মাদরাসাসহ নদীর তীরবর্তী কয়েক হাজার বাসিন্দা। এলাকাবাসী দীর্ঘ দিন ধরে স্থায়ী ব্লক নির্মাণের দাবি করে আসছে। আসন্ন বর্ষায় বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তীর রক্ষা বাঁধ, কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমিসহ কয়েক হাজার বাড়িঘর।
মেঘনা থেকে উৎপন্ন হওয়া তেঁতুলিয়া নদী ভোলা এবং পটুয়াখালী জেলার মধ্য অবস্থিত। নদীটির দৈর্ঘ্য ৮৪ কিলোমিটার এবং গড় প্রশস্থতা ছয় কিলোমিটার। এ নদী ভোলাকে বরিশাল থেকে পৃথক করেছে। জেলার স্থলভাগের আয়তন ছোট হয়ে আসছে অব্যাহত নদীভাঙনের ফলে। নদীর পশ্চিম পাশে বেশির ভাগ চড় পড়ার কারণে পূর্বপাশে পানির চাপ বাড়ায় প্রতি বছরই তলিয়ে যাচ্ছে নদীতে অসংখ্য ঘরবাড়ি, অসহায় হয়ে পড়ছে এ এলাকার মানুষ। কয়েক বছর আগেও যারা ছিল জমি-জমায় সম্পদশালী, তারা হয়ে যাচ্ছে পথের ভিখারি। দৌড়াচ্ছে জনপ্রতিনিধির কাছে।
২০০৭ সালের আইলা বন্যায় এই এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, অনেকের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। নদীর তীর রক্ষাবাঁধ ভেঙে যায় তখন এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের বিনিময়ে তীর রক্ষাবাঁধ নির্মাণ করেন। বর্তমানে সেটা আর নেই। এরই মধ্যে গংগাপুর ইউনিয়ন এর সিংহভাগ সর্বগ্রাসী তেঁতুলিয়া নিয়ে গেছে। এখন কুতুবা ইউনিয়নও তেঁতুলিয়ার ভাঙনের কবলে পরেছে।
এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং এ উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা সিরাজুল হক শরীফ (রহ:) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত, ছোটমানিকা ফাজিল মাদরাসাটি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে কয়েক বছর আগে নদী থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এখন তীব্র ভাঙনে নদী তীর রক্ষা বাঁধের কয়েক গজের মধ্যে অবস্থান করছে। গত কয়েক বছর ধরে ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ডাম্পিং, বাঁশ পাইলিং, বেড়িবাঁধ মেরামতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এরই মধ্যে পাইলিং ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় ও ছোটমানিকা ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক আশ্রাফ ফারুক বলেন, এ মৌসুমে স্থায়ী ব্লকের ব্যাপারে যদি যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হয় তাহলে এ এলাকার মানুষের দুঃখের সীমা থাকবে না। আমাদের পুরানো বাড়িটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে আর এখন নতুন বাড়ির কাছাকাছি নদী এসে গেছে।
সাবেক আমান উল্লাহ হাওলাদার বাড়ির টুটুল হাওলাদার (৫৫) বলেন, তিনবার এ নদী ভেঙে আমার জমিজমা সব নিয়ে গেছে এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মাওলানা বজলুর রহমানও মাদরাসা রক্ষায় ব্লক ব্লকের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। কুতুবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান জোবায়েদ ব্লকের দাবিকে জনগণের দাবি বলে উল্লেখ করেন।
বোরহানউদ্দীন-দৌলতখান উপজেলার এমপি আলী আজম মুকুল নির্বাচনী ইশতেহারে ও নদী তীরবর্তী নয়নের খাল থেকে গঙ্গাপুর ঘাট পর্যন্ত নদী পথে পরিদর্শন করেন এবং শিগগিরই স্থায়ীভাবে ব্লক নির্মাণ করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন বোরহানউনিদ্দন উপজেলার পৌরমেয়র রফিকুল ইসলাম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।


আরো সংবাদ



premium cement