৮ শিক্ষকের স্কুলে পরীক্ষার্থী ১১ তবুও শতভাগ ফেল
- আব্দুর রাজ্জাক ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে এবার শতভাগ অকৃতকার্যের তালিকায় রয়েছে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার চড় মাইজখাড়া গ্রামে অবস্থিত ‘বেগম রূপবান উচ্চবিদ্যালয়’। এখান থেকে ১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিলেও পাস করতে পারেনি একজনও।
গত বুধবার ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের কলাপসিবল গেটে তালা। শিক্ষকদের কক্ষে বসে আছেন প্রধান শিক্ষক ও দুজন সহকারী শিক্ষকা। কোনো শিক্ষার্থী নেই।
অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকার বাসিন্দা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব আব্দুর রাশেদ খান ২০০৮ সালের পহেলা জানুয়ারি নিজ মাইজখাড়া গ্রামে তার মায়ের নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকা শিক্ষা বোর্ড মানবিক শাখায় নবম শ্রেণীতে ভর্তির অনুমোদন দেয়। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার সাথে প্রতিবেশী কয়েকজনের সাথে চলা জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত বছর ৮ মার্চ বিদ্যালয়ে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটে।
খাগ্রাটা গ্রামের বাসিন্দা ও অভিভাবক সেন্টু মিয়া বলেন, শিক্ষার্থী এলেও শিক্ষকরা আসেন না। পরিচালনা কমিটির কাছে এ বিষয়ে জানানোর পরও পাঠদানে কোনো উন্নতি হয়নি। এলাকার স্কুলে ভর্তি করে আমার ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল।
শিক্ষার্থী আইরিন আক্তার, সাব্বির ও শান্ত জানায়, সারা বছরে মাত্র কয়েক দিন ক্লাস হয়েছে। স্যাররা আসেন না। তাই পরীক্ষা ভালো হয়নি। অপর শিক্ষার্থী প্রিয়া আক্তার বলেন, আমাদের অঙ্ক ও ইংরেজি শিক্ষক নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বেগম রূপবান স্কুলে এসএসসি পরীক্ষায় ১১ জনের সবাই একাধিক বিষয় করে ফেল করেছে। আর গণিতে ফেল করেছে সবাই। ইংরেজিতে ৯জন এবং পৌরনীতিতে একজন ফেল করে।
প্রধান শিক্ষক ফরিদুল হক তোতা বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় এবারই প্রথম অংশগ্রহণ করেছে। বিদ্যালয়ে গনিত ও ইংরেজির কোনো শিক্ষক নেই। তাই এই দুই সাবজেক্টে ছাত্রছাত্রীরা ফেল করেছে। এ ছাড়াও ঝরেপড়া ও অন্য স্কুলে ভর্তি হতে না পারা কম মেধাবী শিক্ষার্থীরাই আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়। তাই রেজাল্ট খারাপ হয়েছে। তবে আমরা যতসাধ্য চেষ্টা করেছি।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রাশেদ খান বলেন, এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারি না। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে আগামীতে ভালো পাঠদান করা হবে।
ঘিওর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আগামীকাল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা অফিসের কর্মকর্তারা বিদ্যালয় পরিদর্শন ও তদন্ত করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শানোর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে পাঠদানের অনুমতি বাতিল করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা