১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাঙ্গাবালির সরু খালে জাহাজ ধ্বংসকারী ‘টর্পেডো’ সদৃশ বস্তু

এলাকাজুড়ে আতঙ্ক
টর্পেডো সদৃশ বস্তু বেঁধে রাখছেন স্থানীয়রা : নয়া দিগন্ত -


জাহাজ ধ্বংসকারী ‘টর্পেডো’ নামক অস্ত্রসদৃশ বস্তু ভেসে এসেছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর একটি খালে। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রামসংলগ্ন ভাঙা খালে বস্তুটিকে দেখতে পায় গ্রামবাসী। সে সময় ভাসমান ওই বস্তুটি দেখতে ভিড় করে স্থানীয় লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাছ থেকে বস্তুটি দেখে ভারী কোনো অস্ত্র ভেবে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেয়ে রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। বস্তুটির কাছ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় লোকজনদের। অন্যত্র যাতে ভেসে না যায়, এ জন্য রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় বস্তুটিকে ।
মৌডুবি ইউনিয়নের মীরকান্দা গ্রামের আরাফাত হোসেন বলেন, বস্তুটি দেখতে ভারী কোনো অস্ত্রের মতো। তাই এটিকে প্রশাসন উদ্ধার করে সরিয়ে নেয়ার দাবি তাদের। গ্রামবাসীর ধারণা, পায়রা বন্দর সংলগ্ন রাবনাবাদ চ্যানেল হয়ে হয়তো এটি ভাসতে ভাসতে এই খালে এসেছে। বস্তুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ ফুট।

রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, কোস্টগার্ডকে বিষয়টি অবহিত করা হলে ছবি দেখে তারা প্রাথমিকভাবে জানায় এটি টর্পেডো হতে পারে। টর্পেডো ডুবন্ত থাকে, যেহেতু এটি ভেসে আসছে- তাহলে সম্ভবত ব্যবহারিত। তবুও ঘটনাস্থলে গিয়ে কোস্টগার্ড বিষয়টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।
এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড রাঙ্গাবালী আউটপোস্টের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের পায়রা বন্দর কোস্টগার্ডের আন্ধারমানিক নদীতে যে টিমটি আছে সেটি ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। যতটুকু আমি দেখলাম ওটা টর্পেডো হতে পারে, মিসাইল না। টর্পেডোর মাঝখানে যেভাবে জোড়া থাকে, ওটারও আছে। যেকোনো বড় জাহাজ ধ্বংসকে করে দেয়ার কাজে টর্পেডো ব্যবহার হয়। এটা নৌবাহিনীর কাছে আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘টর্পেডো অনেক ভারী থাকে। সাধারণত এটা পানির নিচে থাকে। যেহেতু এটি ভেসে আসছে, সুতরাং ব্যবহার হয়েছে কিংবা ড্যামেজ হয়েছে বলে ধারণা করছি। তাই পানিতে ভেসে ভেসে আসছে। তবে ভেতরে বাতাস থাকলে বিস্ফোরণের সম্ভাবনা আছে। এজন্য বোম ডিসপোজাল ইউনিট গিয়ে ওটা পরীক্ষা করে দেখতে পারে। আমাদের যে টিম ঘটনাস্থলে গেছে তার রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
টর্পেডো হচ্ছে একধরনের স্ব-চালিত অস্ত্র, যা পানির নিচে বিস্ফোরক ওয়ারহেড বহন করে এবং লক্ষবস্তুর সংস্পর্শে বা কাছাকাছি আসার পর বিস্ফোরিত হতে পারে। এটি পানির নিচে চালিত হয় এবং পানির নিচে বা উপরে উভয় স্থান হতে নিক্ষেপ করা যায়। এগুলোকে বিভিন্ন প্রকারের উৎক্ষেপকের দ্বারা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব।

এদিকে খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পরে বস্তুটি দেখতে ভিড় করেছে উৎসুক জনতা। ইতোমধ্যে এটি পুলিশি পাহারায় রয়েছে বলে জানান রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো: হেলাল উদ্দিন। তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত পুলিশি পাহারায় রয়েছে। কোনো ধরনের শঙ্কা নেই। টর্পেডোটি মিসফায়ার হয়েছে। ভেসে নদীর তীরে এসেছে। কলাপাড়া থেকে কোস্টগার্ডের একটি দল এসেছে। তারা পর্যবেক্ষণ করছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement