১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
প্রচণ্ড গরমে কাজ করতে পারছেন না হ্যান্ডেলিং শ্রমিকরা

বেনাপোল বন্দরে পণ্য লোড-আনলোডে বিঘ্ন

ট্রাক থেকে পণ্য আনলোডের সময় পানি পান করছেন এক শ্রমিক : নয়া দিগন্ত -

প্রচণ্ড গরমে একটানা কাজ করতে পারছেন না বেনাপোল স্থলবন্দরের হ্যান্ডেলিং শ্রমিকরা। ফলে ট্রাকে পণ্য উঠানামা যেমন ধীর গতি দেখা দিয়েছে, তেমনি কমেছে তাদের দৈনিক আয়। তীব্র খরতাপে হতদরিদ্র দিনমজুর বন্দর শ্রমিকদের দৈনিক আয় ও রোজগার ব্যাপক হারে কমে গেছে। সেই সাথে বাড়ছে কষ্ট-দুর্ভোগ। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারা।
যশোর মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া অফিস বলছে, গত শনিবার গত কয়েকদিনের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসে উঠে। গতকাল রোববার বেলা ১টায় তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলে জানা গেছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের হ্যান্ডেলিং শ্রমিক মিন্টু রহমান বলেন, গত ২ সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড গরম। এই গরমে ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের বেশি একটানা কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া দুুপুরে কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। আরেক শ্রমিক ইউনুছ আলি বলেন, আগে ২০ জন শ্রমিক ৩ ঘণ্টায় একটি ট্রাকের পণ্য আনলোড করতাম। এখন সময় লাগছে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এদিকে একটানা কাজ করতে না পারায় শ্রমিকদের আয়ও কমে গেছে। অন্যান্য সময় সারা দিন কাজ করে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করতাম। এখন ২০০-৩০০ টাকার বেশি আয় করা সম্ভব হচ্ছে না।
বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি ও রফতানিকারক আবু নিদাল ফয়সল বলেন, গরমের কারণে শ্রমিকরা লাগাতার কাজ করতে না পারায় ট্রাক থেকে পণ্য খালাস করতে অধিক সময় চলে যাচ্ছে। ট্রাকে পণ্য লোড করতেও তুলনামূলক বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে। এতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ট্রাক চলকদের।
হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাজু উদ্দিন জানান, প্রচণ্ড রোদ আর গরমের কারণে বন্দরের শেড ইয়ার্ড ও গুদামের ভেতরে শ্রমিকরা কাজ করতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন। বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে বিধায় প্রতিদিন ৮-১০ ট্রাকের বেশি লোড দেয়া যাচ্ছে না।
হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের আরেকাংশের সেক্রেটারি জানে আলম বলেন, মাস খানেক বৃষ্টির দেখা নেই। তাই প্রচণ্ড দাপদাহে শ্রমিকরা কাজ এগিয়ে নিতে পারছেন না।
অবশ্য বেনাপোল বন্দরে পরিচালক রেজাউল করিম জানান, গরমে শ্রমিকরা কাজ করতে পারছেন না। এ কারণে লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে সময় কিছুটা বেশি লাগছে। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে তাদের প্রচুর পানি খেতে বলা হচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবার পানির জন্য বন্দর থেকে একটা টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর ওরা ব্যবস্থা করবে দুটি টিউবওয়েলের।
বেনাপোল সিএন্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ পণ্যবাহী ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে বেনাপোলে আসে। বাংলাদেশ থেকে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক রফতানি পণ্য নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে যায়।


আরো সংবাদ



premium cement