জোড়াতালি দিয়ে চলছে জামালপুরের একমাত্র স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
৬ বছরেও লোকবল পায়নি ইসলামপুর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি
জেলার একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলছে অতিথি জনবল দিয়ে। উদ্বোধনের ছয় বছরেও কোনো প্রকার জনবল পায়নি জামালপুরের, ‘ইসলামপুর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি-আইএসটি। ফলে আউটসোর্সিং ও ধার করা কর্মচারী এবং অতিথি শিক্ষক নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এতে মানসম্মত শিক্ষা বিঘিœত হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
২০১৩ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ইসলামপুর পৌর শহরের ধর্মকুড়া এলাকায় সাবেক স্টেডিয়ামে (হামিদ আলী মাঠ) পাঁচতলা একাডেমিক ভবন, ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস, শিক্ষক নিবাস ও অধ্যক্ষের বাংলোসহ প্রয়োজনীয় সব অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর এটির উদ্বোধন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে প্রথম ব্যাচ রেডিওলোজি ও ল্যাবরেটরি বিভাগ নিয়ে এই স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিন বছর মেয়াদি (ডিপ্লোমা) কোর্সের স্বাস্থ্য শিক্ষাকার্যক্রের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ডেন্টাল ও ফার্মেসি বিভাগ চালু হয়। বর্তমানে চারটি বিভাগে ৫৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ডা: মজিবুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালে ১০ জন শিক্ষক, অফিস সহকারী, ড্রাইভার ও নাইটগার্ডসহ ১৮ জন কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা হয়। নয়া দিগন্তকে তিনি বলেন, আমিও এখানে পেশনে আছি। এ ছাড়া ডা: মোখলেছুর রহমান, সহকারী পরিচালক ডা: রবিউল ইসলামও পেশনে আছেন এখানে। বাকিরা স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অতিথি শিক্ষক হিসেবে আসেন। ছাত্র-ছাত্রীদের বেতনের টাকা বা ইনস্টিটিউটের ফান্ড থেকে শিক্ষকদের বেতন দিতে হয়। এ ছাড়া আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীরা আট মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। যে কারণে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা কঠিন হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরে উপপরিচালক (প্রশাসন) ডা: মুজিবুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইএসটির লোকবল সৃষ্টি, লোক নিয়োগ বর্তমানে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণে। এ বিষয়ে তিনি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: টিটো মিঞা ও অধ্যাপক ডা: কাজী আফজালুর রহমান পরিচালকের (প্রশাসন) সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইসলামপুর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে লোকবল নিয়োগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ চলমান আছে। নয়া দিগন্তকে তিনি বলেন, নিয়োগ দেয়া হলেও উচ্চশিক্ষার জন্য অনেকে অন্যত্র চলে যান। এ বিষয়টি নিয়ে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে একান্তে কথা বলেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্থানীয় সাংবাদিক ও কলাম লেখক এম কে দোলন বিশ্বাস বলেন, স্থায়ীভাবে জনবল নিয়োগ বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্থায়ী নিয়োগ হলে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কাজের উদ্যমতা বৃদ্ধি ও উন্নয়ন সাধিত হয়। এ ছাড়া শিক্ষার গুণগত মানও বৃদ্ধি পায়।
স্থানীয় শিক্ষাবিদ কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মনিরুজ্জামান বলেন, এই স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি জামালপুরের গর্ব। কিন্তু দীর্ঘ সময় জনবল নিয়োগ না হওয়ায় এলাকাবাসী ও দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে জনবল নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির আসল উদ্দেশ্য ও লাখ বাস্তবায়নে সরকারের কাছে দাবি জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা