নানা সমস্যায় ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
এক মাসে ১৪৪টি স্বাভাবিক প্রসবের রেকর্ড- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ২৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
নানা সমস্যার মধ্যেও মাতৃ ও শিশু সেবায় যমুনা-ব্রহ্মপুত্র পাড়ের অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে যেন সফলতার মুখ দেখিয়েছেন জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে সন্তান প্রসবে সিজার (অপারেশন) যখন এক প্রকার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে, তখন এই হাসপাতালটি এক মাসে ১৪৪টি স্বাভাবিক প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) করিয়ে এক ঈর্ষণীয় সাফল্যের রেকর্ড তৈরি করেছে। এমনটিই মনে করেন সেবাগ্রহীতা প্রসূতি ও তাদের স্বজনরা।
উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতের চর নামে এক গ্রামের প্রসূতি মমতা বেগমের ভাই আবির বলেন, ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন বাদ দিয়ে এই হাসপাতালে আনার পর এখানে নরমাল ডেলিভারি করানোয় আমরা খুশি। সাপধরী থেকে শান্ত তার বোন সাবিনাকে এনেছিলেন ঘোড়ার গাড়ী ও নৌকায় করে। তিনি বলেন, নরমাল ডেলিভারি হওয়াতে যারপরনাই আমরা খুশি।
যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদনদী বিধৌত নদীভাঙন ও বন্যাকবলিত ইসলামপুর উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এই ৫০ শয্যার হাসপাতালটি। ৩১ শয্যার হাসপাতাল ২০০২ সালে ৫০ শয্যায় উন্নতি করা হয়। বাড়ানো হয় ডাক্তার ও নার্সসহ বিভিন্ন কর্মচারীর পদ। অবকাঠামোগত উন্নয়নও বাড়ানো হয়। ২০১১ সালের দিকে সম্প্রসারিত অবকাঠামোর যাত্রা শুরু হয়। চালু হয় অপারেশন থিয়েটার। কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ের কনসালট্যান্ট এবং এনেস্থেসিয়া ডাক্তার না থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে অপারেশন থিয়েটার।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, এই হাসপাতাল উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং পাশের মেলান্দহ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়নের রোগীরা এসে চিকিৎসা সেবা নেন। প্রতিদিন জরুরি ও বহির্বিভাগে গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন এই হাসপাতালে।
অপারেশন থিয়েটার বন্ধ থাকায় বন্ধ রয়েছে অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রমও। তবে সরকারের স্বাভাবিক সন্তান প্রসব নীতি বাস্তবায়নে ব্যাপক সফলতা লাভ করেছে ৫০ শয্যার ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এক মাসে ১৪৪ টি স্বাভাবিক প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) করানোয় ময়মনসিংহ বিভাগে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। সূত্র জানায়, গত বছর এ হাসপাতালে এক হাজার ৩৯৮টি প্রসূতি মায়ের সফল নরমাল ডেলিভারি হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এ এ এম আবু তাহের বলেন, প্রসূতি মায়েদের সিজার বিমুখ করতে সরকারের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই এই হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর আন্তরিকতায় স্বাভাবিক মাতৃপ্রসবের ওপর জোর দেয়া হয়েচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সবার আন্তরিক চেষ্টায় ২০২৩ সালে ময়মনসিংহ বিভাগের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যায়ে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দ্বিতীয় হয়েছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি নানা সমস্যার মধ্যে নরমাল ডেলিভারিতে আমরা সফল হয়েছি।