২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ফুলজোর নদীতে বিষাক্ত বর্জ্যে কোটি টাকার ক্ষতি

-

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ফুলজোর নদীর পানি গত কয়েকদিন ধরে বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। নদীর পানি দূষণের ফলে খাঁচায় চাষকৃত মাছ ও নদীর নানা
প্রজাতীর জলজপ্রাণী মারা যাচ্ছে। এতে করে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৎস্যচাষিদের। কারখানার কেমিক্যালের বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে খাঁচায় চাষ করা ও নদীর মাছ মরে যাচ্ছে। ফুলজোর নদীতে আব্দুস সালাম, আসাদুল ইসলাম, তুজাম, হাসেম, মাসুদ, লোকমান, ফরিদুল, জহুরুল, জয়নাল, সুজনসহ স্থানীয় ৫১ জন বেকার যুবক প্রায় ১২০০ খাঁচায় দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছেন। নদীটির উজানে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার এসআর কেমিক্যাল ও মজুমদার ফুড প্রোডাক্ট নামে দু’টি শিল্পকারখানা রয়েছে। এ দু’টি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে ফেলায় পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে খাঁচার মাছ ও নদীর জলজপ্রাণী মারা যাচ্ছে। এতে তাদের দুই থেকে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রোববার সকালে উপজেলার রায়গঞ্জ পৌরসভার ধানগড়া, চান্দাইকোনা, ঘুড়কা, সাহেবগঞ্জ, ফরিদপুর, নলছিয়া, তিননান্দিনা, বকুলতলা, নলকা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীর পানির রঙ বদলে গেছে এবং খাঁচা ও নদীর মাছ মরে ভেসে উঠছে।
স্থানীয়রা বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে দেখছি পানির রঙ বদলে নীল রঙ ধারণ করেছে । আজ দেখছি সব ধরনের মাছ মরে ভেসে উঠছে। এভাবে একটি নদীর মাছসহ জলজপ্রাণী ধ্বংস করার নজির কোথাও নেই। কয়েকজন গৃহবধূ বলেন, দুই দিন ধরে নদীর পানি এমনভাবে দূষিত হয়েছে যে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণের বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’ এর নির্বাহী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, এই দু’টি কারখানার বিরুদ্ধে শেরপুর ও রায়গঞ্জ উপজেলার সচেতন মানুষ আন্দোলন করলেও নদী দূষণ বন্ধ হয়নি। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে স্থায়ী প্রতিকারের অনুরোধ জানিয়ে পরিবেশ বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় অবস্থিত মজুমদার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির আসোসিয়েট ম্যানেজার (এইচআর- এডমিন) রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, আমরা আমাদের কেমিক্যাল এসআর কেমিক্যাল কারখানা থেকে কিনে থাকি। এক্ষেত্রে আপনারা তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। নদী দূষণের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদফতর তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
অভিযুক্ত শেরপুর উপজেলার আরেক কারখানা এস আর কেমিক্যাল কারখানায় গেলে সিকিউরিটি ইনচার্জ কিবরিয়া বলেন, আপনাদের সাথে আমাদের স্যার ফোনে কথা বলবেন। গণমাধ্যম কর্মীরা তার দেয়া নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. হাফিজুর রহমান বলেন, কারখানার অপরিশোধতি বর্জ্যরে কারণে গ্যাস হওয়ায় খাঁচায় চাষকৃত মাছ মারা যাচ্ছে।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৃপ্তি কণা মণ্ডল বলেন, জানতে পারলাম বগুড়ার শেরপুর উপজেলার দু’টি কারখানার বর্জ্যে পানি দূষিত হয়ে নদীর মাছ মরে যাচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছি এবং পরিবেশ দফতরের সহকারী পরিচালক এসে স্যাম্পল নিয়ে গেছেন। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।


আরো সংবাদ



premium cement