মিরসরাইয়ে অবাধে বালু তোলায় বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ফেনী নদীতে বালু উত্তোলনে নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের তিলকের খালের মুখে রাতের অন্ধকারে বালু উত্তোলনের যন্ত্র দিয়ে কাটা হচ্ছে চর। ফেনী নদীর একপাশে মিরসরাই অপর পাশে ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়ন। দুই পাশে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
সরেজমিন দেখা গেছে, শীতকালীন সবজি ফুলকপি, টমেটো, মরিচ, শিম, লাউ, মুলাসহ অন্যান্য সবজির আবাদ করেছে কৃষকরা। রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে গেছে তাদের জমি। ইতোমধ্যে ১০ থেকে ১২ একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রাতে চর, দিনে নদীতে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা যেন দেখার কেউ নেই। প্রতিবাদ করলে দিচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আশি বছরের বৃদ্ধ শুধাংশু রায় বলেন, এ দেশে প্রশাসন থাকলে এত অমানবিকভাবে আমাদের জমি কাটত না। আমার পৈতৃক জমি নদীতে চলে গেছে। আগেও কাটত, এখনো কাটছে। আমার প্রায় ৩ একর জমি শেষ।
মুক্তিযোদ্ধা কৃষক আসলাম বলেন, আমরা কি এ জন্য দেশ স্বাধীন করেছি? অমানবিকতার একটা সীমা আছে। দিনে ফসলের কাজ করে বাড়িতে গেলে সকালে এসে দেখা যায় জমি নেই। বালু উত্তোলনকারী সবাই রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন।
আরেক কৃষক আবুল কাশেম বলেন, প্রশাসন এসে দেখে চলে যায়। কোনো প্রতিকার না করায় তারা আরো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এভাবে চলতে থাকলে পুরো গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্রসহ পরিদর্শনে যান ফেনী নদীর এই অংশে। তবে কোনো অভিযান পরিচালনা করেননি তিনি। তখন উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে পরিমাণ বোট কাটার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে সেটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার মতো জনবল এখন নেই। শিগগিরই যৌথবাহিনীকে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, বিজিবির সহযোগিতায় ছাগলনাইয়া উপজেলার সোনাপুর মৌজায় টাস্কফোর্স একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে ৭৫টি শ্যালো মেশিন জব্দ করলেও মিরসরাইয়ে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, ফসলি জমি কাটার বিষয়টি আপনার মাধ্যমে অবহিত হয়েছিথ। শিগগিরই আমরা ব্যবস্থা নেবো।