১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`

রাজবাড়ীতে সাড়া ফেলেছে মাটির বিকল্প কোকোপিট চারা

রাজবাড়ীতে সাড়া ফেলেছে মাটির বিকল্প কোকোপিট চারা -

রাজবাড়ীতে সম্পূর্ণ মাটিবিহীন আধুনিক প্রযুক্তিতে সবজি ও ফলের চারা তৈরিতে ব্যাপক সারা ফেলেছে শরিফ অ্যাগ্রো নার্সারির কোকোপিট। প্লাস্টিকের ট্রেতে নারকেলের ছোবড়া, জৈব সার ও অনুখাদ্যের সংমিশ্রণে মাত্র ১৫-৩০ দিনের মধ্যে বীজ থেকে তৈরি হচ্ছে উন্নত জাতের বেগুন, মরিচ, টমেটো, পেঁপে, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, কলা, তরমুজসহ ৩০ ধরনের সবজি ও ফলের চারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নার্সারির শেডে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ-জীবাণু ও মশা-মাছি প্রতিরোধের ব্যবস্থা থাকায় এসব চারায় রোগবালাই নাই বললেই চলে। তা ছাড়া এসব চারা রোপণের পর দ্রুত বেড়ে ওঠা এবং ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে চাহিদা। পাশাপাশি গুণগত মান ভালো হওয়ায় বর্তমানে রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে সরিফ গ্রিন অ্যাগ্রোর চারা। ফলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
আধুনিক পদ্ধতিতে মাটির বিকল্প হিসেবে কোকোপিটে সম্পূর্ণ মাটিবিহীন উন্নত ও ভালো জাতের সবজি ও ফলের চারা সাধারণ কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে ২০২২ সালের প্রথমে রাজবাড়ীর সদর উপজেলার আলিপুর এলাকায় এক বিঘা জমিতে নার্সারি গড়ে তোলেন শরিফুল ইসলাম মোল্লা। বর্তমানে তার নার্সারিতে প্লাস্টিকের ট্রেতে ৩০ ধরনের সবজি ও ফলের চারা তৈরি হচ্ছে। তার নার্সারিতে চারা তৈরি ও পরিচর্যায় কাজ করছেন পাঁচজন শ্রমিক।
এ দিকে বীজতলার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে শেডের ওপরে পলিফিম এবং রোগ-জীবাণু ও মশা-মাছি রোধে চার পাশে সাইড নেট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এ প্রযুক্তিতে জেলায় আরো কয়েকটি নার্সারি রয়েছে।
পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের ফরিদপুর অঞ্চলের পরিচালক রুকসানা আক্তার গত মঙ্গলবার সরিফ অ্যাগ্রো নার্সারি পরিদর্শনে এসে বলেন, ‘নার্সারিতে সম্পূর্ণ মাটিবিহীন আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত ও ভালো জাতের রোগবালাইমুক্ত সবিজ ও ফলের চারা অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক চারার চাহিদা থাকায় শেড বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এই চারা একমারা যায় না।’
এলাকার চাষি সাহেব আলী শেখ বলেন, ‘আমাদের চারা ওঠানোর সময় শেকড় ছিঁড়ে যেত। কিন্তু ট্রেতে দেয়া চারার শেকড় ছেঁড়ে না। যে কারণে লাগানোর পর চারা মারা যায় না। তাছাড়া এ চারা দ্রুত বাড়ে। গত দুই বছর ধরে এ চারা চাষ কর। আমার ক্ষেতে ফলন ভালো দেখে আশপাশের অনেকেই চারা নিয়ে চাষ করছেন।’
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকরা সারাবছর উন্নত চারা পাচ্ছেন। এ চারা রোগ-জীবাণু প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। মাটিবিহীন চারা হলেও এ চারায় সব ধরনের উপাদান আছে। ফলে এতে কৃষকেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। এতে মাটির বীজতলার চেয়ে সময় ও খরচ সাশ্রয় হয়।’

 


আরো সংবাদ



premium cement