ভালুকায় একের পর এক ভরাট করা হচ্ছে জলাভূমি
আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৩৬
জলাধার ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের তোয়াক্কা না করে ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক ভরাট হয়ে যাচ্ছে খাল বিল ও জলাভূমি। যথাযথ মনিটরিং ও নীতিমালাগুলো কঠোরভাবে প্রয়োগ না হওয়া এবং প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতার কারণে ভূমির অবস্থার পরিবর্তন হয়ে হুমকির মুখে পড়ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
সরেজমিন পরিবেশবিদ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ভরাডোবা এলাকায় অবস্থিত এককালের ঐতিহ্যবাহী নিশিন্দা বিলের কিছু অংশ মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট করে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এক বছর ধরে উপজেলার গোয়ারী গ্রামে উইন্ডি গ্রুপের সাইনবোর্ড টানিয়ে স্থানীয় গারোইল ও দোইল্লা বিল এবং পাশের মলাচাহর বিলটি ভরাট করছে প্রভাবশালীরা। এতে সরকারি খাস জমি বেহাতসহ মাটি আনা নেয়ার কারণে ভালুকা-গফরগাঁও হাইওয়ে সড়ক, ভালুকা বিরুনীয়া ও বাওয়া কংশেরকুল পাকা রাস্তার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
এদিকে কিছুদিন ধরে মহাসড়কের পাশে ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ডের অদূরে কিতোনখলা বিলটি বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। পাশাপাশি একই এলাকার গড়াইল ও কেচুরগুনা বিলটিও ভরাট করা হবে বলে ভরাটকারীরা জানান। এতে সরকারি খাসজমি বেহাতসহ ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। পৌরসভার কলেজপাড়া এলাকায় অবস্থিত আন্দা বিলটির প্রায়ই ভরাট হয়ে গেছে। উপজেলার কাশর, গৌরিপুর এলাকায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিভার্সেল নামে একটি প্রস্তাবিত কারখানার নামে লাউতি খালের অনেকাংশ ভরাট করা হয়েছে। তা ছাড়া পাড়াগাঁও এলাকায় বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং ধামশুর গ্রামে অবস্থিত সিংগারবিলটি সানি পোলট্র্রি ফিট কোম্পানি ও বিলের উজানে শেখ জহিরউদ্দিন সিএনজি কর্তৃপক্ষ অনেকাংশই মাটি ও বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে। তা ছাড়া বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’পাশে ভালুকা অংশে বেশ কয়েকটি খালসহ জলাশয়গুলো ভরাট করে প্রভাবশালীরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে ফেলেছেন।
ভরাডোবার কিতোনখলা বিল ভরাটে বালু সরবরাহকারী মফিজুল ইসলাম দুলু জানান, নাসির গ্রুপ বিলটি ভরাট করছে। তারা শুধু বালু সরবরাহ করছেন। এতে তারা প্রতি ফুট ৫০ পয়সা পেয়ে থাকেন। প্রায় ৪ কোটি ফুট বালু পড়বে বলে তিনি জানান।
সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো: আরাফত জানান, বালু ফেলানোর বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দিতে পারবেন না। ওপর মহলের সাথে কথা বলে জানাবেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্যসচিব কামরুল হাসান পাঠান কামাল জানান, গত কয়েক বছরে ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক জলায়শয়, খাল ও বিল-ঝিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। জলাশয় আইনটি কিছুটা দুর্বল হওয়ায় এমনকি সংশ্লিষ্ট বিভাগের যথাযথ তদারকি না থাকার কারণেই প্রভাবশালীরা যার যেভাবে ইচ্ছা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করে চলেছেন। আর এসবের প্রতিবাদে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা শাখার উদ্যোগে অনেকবার মানববন্ধন ও স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আবদুল্ল্যাহ আল মাহমুদ জানান, ভরাডোবা এলাকায় বিল ভরাটের বিষয়টি তার জানা নেই। তা ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জলাশয় ও খাল-বিল ভরাটের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্টাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা