০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১, ৫ শাবান ১৪৪৬
`

ফুলবাড়ীতে বিনাচাষে সরিষা আবাদে সাফল্য

ফুলবাড়ীতে বিনাচাষে সরিষা আবাদে সাফল্য -

প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদ করে সাফল্য অর্জন করেছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছেন, সাথী ফসল হিসেবে সরিষা চাষ হওয়ায় এক দিকে যেমন- খরচ ও সময় বাঁচে, অন্য দিকে সরিষা চাষও বৃদ্ধি পায়। বাজারে ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণে এটি একটি সহজ ও লাভবান প্রক্রিয়া।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোজ্যতেল আমদানিতে যেমন চাপ কমবে, তেমনি আমদানি ব্যয়েও বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ কমবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে ভরে উঠেছে মাঠের পর মাঠ। মাঠ জুড়ে হলুদ রঙে ছেয়ে গেছে প্রকৃতি। ধান কাটার পর সেই জমিতে বিনাচাষে সরিষা চাষ করেছেন চাষিরা। তারা জানান, কৃষি অধিদফতরের পরামর্শে বিনাচাষে পরীক্ষামূলকভাবে ধানক্ষেতে তারা সরিষার বীজ বপন করেছিলেন। এতে দেখা গেছে ধান কেটে নেয়ার কিছু দিন পরেই সেই সরিষাবীজ গজিয়ে নাড়ার ওপর দিয়ে উঁকি মারছে। আরো কিছু দিন পর পুরো ধানক্ষেত ভরে গেছে সরিষা গাছে। ধানের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে সরিষার ফলন অতিরিক্ত হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। এখন এই সরিষা কেটে একই জমিতে তারা বোরো ধানের আবাদ করবেন।
তেঁতুলিয়া গ্রামের কৃষক মাহমুদ আলম বলেন, তিনি প্রথমবার ৫০ শতক জমিতে ধানক্ষেতে সরিষা চাষ করে সাফলতা পেয়েছেন। একই সাথে সরিষা ও ধান চাষ প্রাপ্তিতে একই জমিতে তিন ফসল পাওয়া যাচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচও অনেকে কম হচ্ছে। একই কথা বললেন, খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক নুর আলম ও রাজারামপুর গ্রামের মোজাম্মেল হক।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এক হাজার ৮২৩ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ একর জমিতে প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে বিনাচাষে সরিষা আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৬৬১ মেট্রিক টন।
জেলার বাণিজ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার ৩৩ লাখ ১৫ হাজার জনগণের জন্য ৪০ হাজার টন ভোজ্যতেলের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে স্থানীয় উৎপাদিত সরিষা থেকে ১২ ভাগ ভোজ্যতেলের জোগান আসে। বর্তমানে সরিষা আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ জোগান কিছুটা বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলার তেল মিল মালিকরা জানান, প্রতি টন সরিষা থেকে ৪০০ লিটার তেল উৎপাদন করা হয়, সেই হিসেবে দুই হাজার ৬৬১ টন সরিষা থেকে এক হাজার ৬৬৪ লিটার তেল উৎপাদন করা সম্ভাব হবে, যা ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ৩০ ভাগ।


আরো সংবাদ



premium cement