২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রামগতিতে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলছে ৪০ ইটভাটা

রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের চরআফজল গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্মিত ইটভাটা। : নয়া দিগন্ত -

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় গড়ে উঠেছে ৪০টি অবৈধ ইটভাটা। ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে এসব ইটভাটা। এখানে কাঠের চেলা দিয়ে ইট পোড়ানোর কারণে কাঠের কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সেই সাথে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। অনুমোদনহীন এসব ইটভাটা বন্ধে স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও জেলা-উপজেলা প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। উল্টো ইটভাটার কয়েকজন মালিক জানালেন, তারা প্রশাসনকে টাকা দিয়েই ইটভাটা পরিচালনা করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের চরআফজল গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডজুড়ে ইটভাটার ছড়াছড়ি। এ গ্রামে গড়ে ওঠা ভাটাগুলো হলো- এডব্লিউবি, এসবিএম, এফএবি, এডব্লিউবিটু, টিবিএল, এসিবি, আরবিএম, এবিএম, বিবিএম, এএমআরই, এসএসবি, এআরবি, এফএমবি, পিবিএম, এসএবি, এমএসবি, এএমএ, বিবিএল, এমবিএল, জেএসবি, এমপিবি, ফাইভস্টার ও ফোরস্টার।
স্থানীয়রা বলছেন, ভাটার চার পাশে থাকা ফসলি জমির ধান, সয়াবিন, বাদামগাছসহ বিভিন্ন রবিশস্য জন্মায় না। জন্মালেও ফলন হয় খুবই সীমিত পরিমাণে। তারা জানান, ইট তৈরিতে ব্যবহৃত মাটির সবটাই যাচ্ছে ফসলি জমি থেকে। তাদের অভিযোগ, কৃষিজমি রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। নজরদারি নেই পরিবেশ অধিদফতরেরও।

রামগতি ইটভাটা সংগঠনের সভাপতি হাজী খলিল উল্যাহ বলেন, এ অঞ্চলের অধিকাংশ ইটভাটা অবৈধ। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিক লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। প্রশাসন অভিযান চালালে কী করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কী-ই-বা করার আছে? তিনি আরো জানান, বিভিন্ন দিবস পালনের নামে প্রশাসন ও পুলিশ আমাদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা নিয়ে যায়। তারা অভিযান চালালে তাদের অতিরিক্ত আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে।
লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক হারুনর রশিদ বলেন, রামগতি-কমলনগর উপজেলায় কৃষিজমি নষ্ট করে গড়ে উঠেছে প্রায় ৬০টির মতো অবৈধ ইটভাটা। আমাদেরকে অবহিত না করে কিভাবে তারা ইটভাটাগুলো স্থাপন করছেন? উল্টো তিনিই আমাদের কাছে প্রশ্ন রাখছেন।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী এ উপজেলায় ৪০টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে মাত্র দু’টির। তবে কয়েকটির মালিকপক্ষ আবেদন করে রেখেছেন। অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো অবস্থাতেই অবৈধ ইটভাটা চালাতে দেয়া যাবে না।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজিব কুমার সরকার বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের সাথে কথা বলে এসব অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement