ডিস লাইনের কর্মচারী ফজলু শতকোটি টাকার মালিক
- টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৩
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামের ফজলু মল্লিক এখন শতকোটি টাকার মালিক! অথচ ১৫ বছর আগেও তিনি ছিলেন ডিস লাইনের বিল তোলার এক সামান্য কর্মচারী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এভাবে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন।
গত ২৯ অক্টোবর টাঙ্গাইল শহরের সোনিয়া আক্তারসহ পাঁচজন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন। একই সাথে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বরাবর এই অভিযোগের অনুলিপি পাঠানো হয়।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে- ছাব্বিশা গ্রামের ফায়েজ মল্লিকের ছেলে ফজলু মল্লিক ১৫ বছর আগে ডিস লাইনের বিল তোলার কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের সাথে সখ্য গড়ে তুলেন তিনি। তার মামাতো ভাই ভূঞাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির ঘনিষ্ঠজনে পরিণত হন তিনি। এরপর তিনি কৌশলে রফিকুল ইসলামকে দিয়ে বালু মহাল চালানো এবং বিভিন্ন ধরনের ভুয়া প্রকল্প সাজিয়ে অর্থ আত্মসাতের মিশন শুরু করেন। বিভিন্ন ব্যক্তির লাইসেন্সে কাজ নিয়ে নামকাওয়াস্তে কাজ করে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কাজের নামে হাতিয়ে নেন তিনি শতকোটি টাকা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলায় টাঙ্গাইলের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনিসহ পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতার সাথে ফজলু মল্লিককেও অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ফজলু মল্লিক তার অবৈধ টাকা দিয়ে ভূঞাপুর উপজেলা শহরে ছয়তলাবিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ করেন। এ ছাড়া তিনি ভূঞাপুরে একটি গ্যারেজ তৈরি করেন। সেখানে রয়েছে তার ৮০টি ভেকু মেশিন (খননযন্ত্র)। চট্টগ্রামেও তার একটি ভেকুর গ্যারেজ রয়েছে। এ ছাড়া ভূঞাপুরে ৯টি, টাঙ্গাইলে চারটি ও ঢাকায় দু’টি জমির প্লট রয়েছে তার। টাঙ্গাইলের আদালতপাড়ায় একটি ও ঢাকার বনানীতে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার লেকেরপাড়া ইউনিয়নের ঝোলাবাড়ি খালের কাছে একটি ইটভাটা রয়েছে তার। এ ছাড়া কৌশলগত কারণে তিনি তার ভাই, স্ত্রী ও অন্য আত্মীয়-স্বজনের নামেও গড়ে তুলেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়।
অভিযোগকারী সোনিয়া আক্তার বলেন, ফজলু মল্লিক আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় দলের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে শতকোটি টাকার মালিক হন। এই টাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পৈশাচিকতা নিষ্ঠুরতা চালায়। তিনি নিজেও সাবেক এমপি ছোট মনিরের সাথে ঢাকার উত্তরায় ছ্ত্রা আন্দোলন বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেন।
অভিযুক্ত ফজলু মল্লিক বলেন, শুনেছি আমার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ করা হয়েছে। এখন দুদক তদন্ত করে দেখুক আমার কী আছে। শত্রুতা করে আমার বিরুদ্ধে অনেকেই অনেক কিছু বলতে পারে। যারা অভিযোগ করেছেন তাদের কাছে জিজ্ঞেস করুন। আমার সাথে কথা বলে লাভ নেই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঢাকার সেগুন বাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের ল্যান্ডফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও কেউ তা রিসিভ করেননি। পরে দুদক টাঙ্গাইলের উপ-পরিচালক ফখরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি মোবাইলে বলেন, এ বিষয়ে হেড অফিস থেকে আমরা এখনো কোনো পেপার্স পাইনি। পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা