কুশিয়ারা নদীর বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তায় ভাঙন
- মুহিব হাসান ওসমানীনগর (সিলেট)
- ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৩
সিলেটের শেরপুর কুশিয়ারা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর ও সড়কে ভাঙন শুরু হয়েছে। সড়ক ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় হুমকিতে পড়েছে নতুন বস্তি গ্রাম। একই কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুর ব্রিজটিও। নদী তীরবর্তী গ্রামের ভেতর দিয়ে পাইপ টেনে নিয়ে বিভিন্ন মাঠে বালু সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এতে বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, ভেঙে পড়ছে সড়ক।
শেরপুর ব্রিজের পূর্বপাশের্^ নতুন বস্তি নামক গ্রামে বালুর মাঠ তৈরি করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাসেল আহমদ ও যুবলীগ নেতা এমরান আহমদ গং ‘এ আর এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে কুশিয়ারায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলণ, সংরক্ষণ ও সরবরাহ করে আসছেন। এভাবে বালু উত্তোলন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ থাকলেও তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালুর ব্যবসা করছেন। গত সপ্তাহে বালুর মাঠের পার্শ্ববর্তী নতুন বস্তি গ্রামে চলাচলের সড়কটির কিছু অংশ ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের আশঙ্কা যেকোনো সময় ব্রিজের গোড়ার মাটি ও রাস্তার বাকি অংশ নদীতে ধসে পড়তে পারে।
নতুন বস্তি গ্রামের বাসিন্দা কয়েছ মিয়া, নাসির মিয়া ও সুহেল মিয়া বলেন, নদীর তীরঘেঁষা গ্রামে প্রায় পাঁচশ’ পরিবার বাস করছে। তারা ব্রিজের নিচ দিয়ে যাতায়াত করত। বালুর মাঠ তৈরি করার জন্য রাসেল ও এমরান সেই পথ বন্ধ করে দিয়েছে। বালু তোলার কারণে গ্রামের রাস্তাটি ভেঙে গেছে। গ্রামের ভেতরের রাস্তাঘাট ভেঙে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসি। ব্যবসায়ী সৈয়দ হুমায়েল বলেন, শেরপুর বালু ব্যবসার একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজন খান বলেন, শেরপুর ব্রিজের নিচে সরকারি জায়গায় এ আর এন্টারপ্রাইজ ও চায়না কোম্পানি মাঠ তৈরি করে বালু সংরক্ষণ করছে। এ কারণে নদীর তীর ও নতুন বস্তি গ্রামের রাস্তা ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে এমরান আহমদ বলেন, ব্রিজের নিচের মাঠ আমার নয়। আমার মাঠ ব্রিজ থেকে তিনশ’ মিটার দূরে। বর্তমানে আমার মাঠ বন্ধ রয়েছে।
চায়না রেলওয়ে ফার্স্ট গ্রুপের সহকারী কর্মকর্তা মি. লিও বলেন, ব্রিজের নিচের বালুর মাঠ আমাদের নয়। এটা সাপ্লায়ারদের। আমরা বালু উত্তোলন করি না, বালু উত্তোলন করেন সাপ্লায়াররা।
ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার গাইন বলেন, কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও ব্রাহ্মণগ্রাম মৌজায় সংরক্ষণের জন্য সরকারের কোনো অনুমতি নেই। আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার এসিল্যান্ড সানজিদা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছরিন চৌধুরী বলেন, এটাতো এসিল্যান্ড দেখেন। কোন জায়গাটা, আপনি আমাকে মেসেজ করে দেন, আমি দেখব।